অযোধ্যা: প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়ে গিয়েছে অযোধ্যায় ভব্য রাম মন্দিরের। সোমবারই ছিল জমকালো অনুষ্ঠান, যেদিকে নর রেখেছিল গোটা বিশ্ব। সামনে এসেছে, মইসুরুর ভাস্কর অরুণ যোগীরাজের খোদাই করা অপূর্ব সূন্দর কালো পাথরের রাম মূর্তি। প্রাণ প্রতিস্থা অনুষ্ঠানের সময় মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপন করা হয়েছে এই ৫১ ইঞ্চি দীর্ঘ রাম মূর্তি। অভিষেকের দিন, মূর্তিটির মাথায় ছিল সোনার মুকুট, পরণে হলুদ ধুতি, গলায় সোনার অলঙ্কার এবং হাতে সোনার তীর-ধনুক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘আমাদের রামলালা আর তাঁবুতে থাকবেন না।’ তাঁবু বলতে তিনি রামলালার অস্থায়ী মন্দিরের কথা বলেছেন। যে মন্দির ভব্য রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর, প্রশ্ন উঠছে, অস্থায়ী মন্দিরে স্থাপিত রামলালার পুরোনো মূর্তিটির কী হবে? যে মূর্তিকে কেন্দ্র করে, গত তিন দশক ধরে আবর্তিত হয়েছে রাম ভক্তদের আবেগ। উসকে উঠেছে রাম মন্দির আন্দোলন।
১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর রাত। তখনও বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়নি। হঠাৎ করেই মসজিদের ভিতর পাওয়া গিয়েছিল এক রামমূর্তি। হিন্দুদের একাংশ দাবি করেছিল, বাবরি মসজিদের ভিতর নাকি অলৌকিকভাবে আবির্ভাব ঘটেছে ওই রাম মূর্তির। এই ঘটনাইরাম জন্মভূমি নিয়ে ধর্মীয় আবেদকে উসকে দিয়েছিল। যা থেকে শুরু হয়েছিল পরবর্তী কয়েক দশকের আইনি লড়াই। তবে অযোধ্যা প্রশাসন বলেছিল, ওই মূর্তি মসজিদের ভিতর ফেলে এসেছেন হনুমানগড়ী মন্দিরের মোহান্ত অভিরাম দাস। তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করেছিল পুলিশ, তবে, তার কখনই নিষ্পত্তি হয়নি।
রামলালার সেই মূর্তি ভিতরে থাকা অবস্থাতেই, মসজিদে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল সরকার। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর, ৭ ডিসেম্বর ওই জায়গায় একটি তাঁবুর মতো অস্থায়ী রাম মন্দির তৈরি করেছিলেন করসেবকরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই, ব্যানার তৈরির কাপড় দিয়ে তাড়াহুড়ো করে তৈরি করা হয়েছিল ওই মন্দির। সেটি না হলে, আজকের ভব্য মন্দির তৈরি হত না বলে মনে করেন করসেবকরা।
সেই থেকে রামলালার মূর্তিটি ওই অস্থায়ী তাঁবু মন্দিরেই রয়েছে। ভব্য মন্দির তৈরির পর তার কী হবে? রাম মন্দিরের কর্তাব্যক্তি ও পুরোহিতরা জানিয়েছেন, রামলালার ওই পুরোনো মূর্তিটিকেও নতুন মন্দিরে একটি সিংহাসনে স্থান স্থাপন করা হবে। নতুন রামলালা মূর্তিটির ঠিক বিপরীতেই সিংহাসনে উপবিষ্ট হবে পুরোনো মূর্তিটি। তবে তার আগে কিছু আচার-অনুষ্ঠান করা হবে।
মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র বলেছেন, “যে প্রভু ইতিমধ্যেই সেখানে রয়েছেন, তিনিও নতুন মন্দিরে চলে আসবেন। কিছু আচার-অনুষ্ঠানের পর পুরোহিতরা অস্থায়ী তাঁবু থেকে মূর্তিটি নতুন মন্দিরে স্থানান্তর করবেন। অস্থায়ী মন্দিরে যে মূর্তিটি রয়েছে, সেটিও গর্ভগৃহে স্থাপন করা হবে। রাম লালার নতুন দাঁড়ানো মূর্তিটি এবং ১৯৪৯ সালে ‘আবির্ভূত হওয়া’ – দুটি মূর্তিই গর্ভগৃহে থাকবে।”