
চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক কাঠামো বদল নিয়ে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে পঞ্জাবে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্র সরকার চণ্ডীগঢ়ে বড়সড় প্রশাসনিক পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপ করতে পারে। পেশ করা হতে পারে সংবিধানের ১৩১ তম সংশোধনী বিল। আর এই বিলের উদ্দেশ্য চণ্ডীগঢ়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অন্তর্ভুক্ত করা। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক গুঞ্জন। তবে রাজনৈতিক এই উত্তাপের মধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক শনিবার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা জারি করে জানিয়েছে—চণ্ডীগঢ়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর আওতায় আনার প্রস্তাব এখনও ‘পর্যালোচনার স্তরে’ রয়েছে। এ নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।
স্বরাষ্ট্র-মন্ত্রকের পোস্টে বলা হয়েছে, চণ্ডীগঢ়ের উপর কেন্দ্রীয় আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া সহজতর করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর জেরে পঞ্জাব–হরিয়ানার ঐতিহ্য কোনওভাবেই বদলে যাবে না। মন্ত্রক লিখেছে, “এটি কেবলমাত্র আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া সহজ করার প্রস্তাব,যা এখনও সরকারের অভ্যন্তরে বিবেচনায় রয়েছে।”
বিতর্কের শুরু কোথা থেকে?
সম্প্রতি সংসদের একটি বুলেটিনে বলা হয়, ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন অধিবেশনে ১৩১ তম বিল পেশ করা হতে পারে। আর এই বিল পেশের অর্থ হল চণ্ডীগঢ়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অন্তর্ভুক্ত করার দিকে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। কারণ এটি কার্যকর হয়ে গেলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মতোই নিয়ম কার্যকর হবে। রাষ্ট্রপতি চাইলে নতুন নিয়ম প্রণয়োন করতে পারবেন। আর এই নিয়েই সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা।
মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, “চণ্ডীগঢ় ছিল,আছে এবং সর্বদা পঞ্জাবেরই থাকবে। পঞ্চাব তার রাজধানীর অধিকার ছাড়বে না।” অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, কেন্দ্র পঞ্জাবের পরিচয় ও সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করছে।
পঞ্জাব কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিং বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “চণ্ডীগঢ়কে পঞ্জাব থেকে বিচ্ছিন্ন করার যে কোনও প্রয়াস গুরুতর পরিণতি ডেকে আনবে। কংগ্রেস এই বিল সংসদে ঠেকাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।
অনুচ্ছেদ ২৪০-এ কী আছে?
এই অনুচ্ছেদ বলা রয়েছে, দেশের রাষ্ট্রপতি শান্তি ও সুশাসনের জন্য নিয়ম তৈরি করতে পারবেন আন্দামান ও নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন ও দিউ পুদুচেরিতে নতুন নিয়ম তৈরি করতে পারেন। এবার সেই তালিকায় চণ্ডীগঢ়কে ফেলার প্রস্তাব রাখতেই বিতর্ক শুরু।
বস্তুত,পঞ্চাব ও হরিয়ানা এই দুই রাজ্যেরই রাজধানী হল চণ্ডীগঢ়। দীর্ঘদিন ধরে দাবি করা হচ্ছিল চণ্ডীগঢ়কে পঞ্চাবের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আর হরিয়ানা পাক আলাদা রাজধানী। কিন্তু তার মধ্যেই এই পদক্ষেপ বিতর্ক তৈরি হয়েছে।