উজ্জয়িন: আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সারা দেশে নাকি ছিছিক্কার পড়ে গিয়েছে। আন্দোলন হচ্ছে। তাতে লাভের লাভ কি কিছু হচ্ছে? দেশের ধর্ষণ চিত্রটা এতটুকু পাল্টাচ্ছে? না। বড় হতাশা নিয়ে বলতে হচ্ছে না। এবার, একেবারে প্রকাশ্য দিবালোকে ভিড়ে-ভিড়াক্কার রাস্তার ধারে চলল ধর্ষণ! পথচারীরা যারা ছিল, তারা কেউ আটকালো না। বরং, ব্যস্ত থাকল ফোন ক্যামেরা বের করে সেই ধর্ষণ দৃশ্য ভিডিয়ো রেকর্ড করতে। তারপর, সেই ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ার আনাচে কানাচে। ঘটনাটা এতটাই অবিশ্বাস্য যে মনে হতে পারে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্য। তবে, কোনও চিত্রনাট্যকারের পক্ষেও এতটা অবাস্তব ভাবনা হয়তো ভাবা সম্ভব নয়। কিন্ত, এমন ঘটনাই ঘটেছে মধ্য প্রদেশের উজ্জয়িন শহরে!
জানা গিয়েছে, এই বীভৎস ঘটনা ঘটে বুধবার বিকেলে, উজ্জয়িনের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা কয়লা ফটকে। ধর্ষকে চিহ্নিত করতে পেরেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, তার নাম লোকেশ। তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। একইসঙ্গে যারা ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিল ওই ঘটনার। তাদেরও ৩-৪ জনকে সনাক্ত করা গিয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা কাগজ কুড়িয়ে দিনযাপন করেন। অভিযুক্ত লোকেশ তাঁর পূর্বপরিচিত। লোকেশ তাঁকে বিয়ে করবে বলে লোভ দেখিয়ে তার সঙ্গে যেতে রাজি করায়। এরপর তাঁকে মদ পান করতেও প্ররোচিত করে। অনেকটা মদ খেয়ে ওই মহিলা যখন নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন লোকেশ তাকে রাস্তার পাশের ওই জায়গায় নিয়ে এসে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর লোকেশ পালিয়েছিল।
ভাইরাল ভিডিয়োটি দেখে পুলিশ প্রথমে নির্যাতিতাকে সনাক্ত করে। তারপর তাঁকে থানায় নিয়ে এসে তাঁর অভিযোগ শোনা হয়। নির্যাতিতাত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ভিডিযোটি পর্যালোচনা করে পুলিশ অভিযুক্ত লোকেশকেও শনাক্ত করে এবং পরে তাকে গ্রেফতার করে। তবে, এই ন্যক্কারজনক ঘটনা, ঝড় তুলেছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য সরাসরি ক্ষমতাসীন বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছে বিরোধী কংগ্রেস।
কংগ্রেসের মধ্য প্রদেশ শাখার পক্ষ থেকে, যৌন নিপীড়নের ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলা হয়েছে, “আবারও লজ্জায় ঢাকল পবিত্র শহর উজ্জয়িন। ক্ষমতাসীনদের হয় লজ্জায় মরে যাওয়া উচিত নয়তো পদত্যাগ করা উচিত।” কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি, জিতু পাটোয়ারি লিখেছেন, “ফের কলঙ্কিত পবিত্র শহর উজ্জয়িন। মধ্য প্রদেশে এখন প্রকাশ্য রাস্তায় ধর্ষণ হচ্ছে। আইন ও সরকার সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে গেলেই এটা সম্ভব। মুখ্যমন্ত্রীর নিজ শহরে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বাকি রাজ্যের অবস্থা কি, তা কল্পনা করাই যায়।”