
রবিবার সকালেই নেমে আসে চরম বিপদ। হায়দরাবাদের চারমিনার কাছেই গুজ্জার বিল্ডিংয়ের কাছে একটু বহুতলে আগুন লেগে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। যার মধ্যে ৮ জনই আবার শিশু। আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ছুটে আসেন। হাত লাগান উদ্ধার কাজে। তাঁদের মধ্যেই একজন হলেন চুড়ি ব্যবসায়ী জাহির। দুর্ঘটনার পরে এক সাক্ষাৎকারে ইংরেজি সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে তিনি যা জানান, তাতে হাড়হিম হয়ে যাচ্ছে অনেকেরই।
জাহির জানাচ্ছেন তাঁর চোখের সামনে এক আগুনের হাত থেকে নিজের সন্তানদের বাঁচাতে জড়িয়ে ধরেন এক মহিলা। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁদের বাঁচানো যায়নি। আগুনের লেলিহান শিখা জাহিরের চোখে সামনেই গ্রাস করে ওই মহিলা এবং তাঁর সন্তানের।
জাহির বলেন, “আগুন লাগার কিছুক্ষণ পরে আমরা ভেতরে ঢুকতে পারি। দাউ দাউ করে জ্বলছিল আগুন। ওই ঘরের ভেতর এক মহিলা তাঁর শিশুকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যু হয়।”
প্রসঙ্গত, এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে বলে ধারাণা। অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে ঘুমের মধ্যে। জানা গিয়েছে এই বহুতলের নির্মাণের ধরনের কারণে উদ্ধার কাজেও সমস্যা হচ্ছিল।
এই বাজারের বেশিরভাগ দোকান ১০০ বছরের পুরনো। তার উপরেই তৈরি হয়েছে ঘর। এই গরমে প্রায় সবাই এসি চালিয়ে ঘুমোয়। ফলে দরজা-জানলা সব বন্ধ থাকে। তাই বিষাক্ত ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়েও মৃত্যু হয়েছে।
জাহির জানান, ভেতরে ঢোকাই খুব কঠিন ছিল। তিনি বলেন, “আমরা ১৩ জনকে বের করে এনেছি। ধোঁয়ার কারণে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। একটা দেওয়াল ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করি। অনেকেই হয় পুড়ে না হয় দমবন্ধ হয়ে মারা গেছেন।”
তেলেঙ্গানা দমকল বিভাগের একটি বিবৃতি অনুসারে ১৭ জন নিহতের পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আটজন শিশু। সবচেয়ে ছোট শিশুর বয়স মাত্র একবছর। ৪ জন প্রবীন এবং ৫ জন মহিলা ছিলেন। জানা গিয়েছে ওই পরিবারের মাত্র একজন সদস্য বাড়ি ছিলেন না তাই তিনি বেঁচে গিয়েছেন।”
তেলেঙ্গানা ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর জেনারেল ওয়াই নাগি রেড্ডি এনডিটিভিকে বলেন, “আগুন লাগার খবর পাওয়ার কয়েক মিনিট পরেই দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। এখানে মূল সমস্যা হল কেবল একটি প্রবেশপথ। খুব সরু সিঁড়ি দিয়ে দোতলা এবং তিনতলায় যাওয়া যায়। তাই আগুন লাগলে পালানোর কোনও উপায় থাকে না।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্যালয় থেকে মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জানিয়েছে।