
কেশপুর: সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদের সভা থেকে ফিরিস্তি দিয়েছিলেন যে ওয়াকফ নিয়ে সরকার ঠিক কী কী করেছে। এই আবহের মধ্যেই এবার তাঁরই দলের নেতাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ। ওয়াকফ সম্পত্তির দখল নিয়ে তৃণমূলের নেতার দাদাগিরি। দুই পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর ব্লকের চড়কা গ্রামের ঘটনা। জানা গিয়েছে, ইউসুফ আলি ও সহারাব আলির পরিবার বিগত বেশ কয়েক বছর আগে তাঁদের প্রায় ৯ একরের চেয়েও বেশি জায়গা ওয়াকফ বোর্ডে দিয়েছিলেন। কিন্তু দখলদার ছিল তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে। বিগত প্রায় দু’বছর ধরে এই দখলদার কাছে থাকবে সে নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্তমানে স্থানীয় তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য উহাব আলির নেতৃত্বে বেশ কিছু তৃণমূলী দুষ্কৃতী এই দুটি পরিবারের উপর সমস্যার সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ। তাঁদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ । আর সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই এবার সরাসরি জেলা শাসকের কার্যালয়ের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে পরিবারের সদস্যরা। শেখ ইউসুফ আলি ও শেখ আলির পরিবারের অভিযোগ, এই ওয়াকফ সম্পত্তি তাঁদের দখলে থাকলেও স্থানীয় তৃণমূলের নেতার সহযোগিতায় কিছু দুষ্কৃতী ওই সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে চাইছেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই দুটি পরিবারকে সামাজিক বয়কট করে রাখা হয়েছে বলেও পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।
এমনকী, সম্প্রতি ওই জমিতে যে ধান চাষ করা হয়েছিল সেই ধানও কেটে নিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও তার আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। বিগত কয়েক মাস আগেই ওই পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি বলে দাবি। তাই এবার বাধ্য হয়েই তারা জেলা শাসকের কার্যালয়ের সামনে পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে হাজির হয়েছেন। আর তা জানাজানি হতেই ইতিমধ্যেই জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। চড়কা গ্রামের আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা বলেন, “আমাদের বাড়ি থেকে বেরতে দেয়নি। বাবা-মা বাড়ি থেকে বেরলেই রাস্তায় তেড়ে আসছে মারতে। সাধারণ মানুষের উপর এত অত্যাচার চলছে অথচ প্রশাসন কিছুই বলছে না।”
বিজেপির জেলার মুখপাত্র অরূপ দাসের অভিযোগ, তৃণমূল মানেই চোর। যদিও, পুরো ঘটনার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন তৃণমূল নেতা মোহাম্মদ রফিক। তাঁর দাবি ওয়াকফ সম্পত্তি যদি দানই করে থাকেন তাহলে তার দখলের কেন তারা থাকবেন?