কলকাতা: কলকাতায় ফিরছে কনটেনমেন্ট জ়োন (Containment Zone in Kolkata)। শহরের ২৫ টি জায়গাকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। পুরনিগমের বৈঠকে সোমবারই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ফিরছে সেফ হোমের ব্যবস্থাও। প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য হরেকৃষ্ণ শেঠ লেন, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম সহ মোট তিনটি সেফ হোম চালু করা হচ্ছে। মঙ্গলবার থেকেই শহরে ফিরছে সেফ হোম।
এর পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন বহুতলগুলির লিফ্ট স্যানিটাইজ় করতে হবে বলেও সোমবার পুরনিগমের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্যানিটাইজ়েশন করতে হবে প্রত্যেক বাজার এলাকাকেও। বাজারে প্রত্যেক বিক্রেতার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। এই বিষয়ে পুলিশকে কড়া ভূমিকা পালন করতে বলেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যাঁরা মাস্ক পরবেন না, তাঁরা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন মেয়র।
সোমবার পুরনিগমের বৈঠকের পর ২৫ টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যে কনটেইনমেন্ট জ়োনের সংজ্ঞা বদলেছে। আগে যেখানে একটি বড় এলাকা বা একটি গোটা পাড়াকে কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করে এলাকার প্রবেশপথ বাঁশ, পুলিশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হত, এখন পরিস্থিতি তেমন নয়। বর্তমানে ছোট ছোট এলাকা চিহ্নিত করে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এক একটি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োনের মধ্যে একটি বহুতল ফ্ল্যাট বা একটি একক বাড়িও হতে পারে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
ফুলবাগান থানা এলাকার মধ্যে তিনটি কনটেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বস্তি এলাকা এবং একটি ফ্ল্যাট। মানিকতলা থানা এলাকার একটি কমপ্লেক্সকে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। বউবাজার থানা এলাকার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তালিকায়। হরিদেবপুর থানা এলাকার ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ কয়েকটি হোস্টেলকে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে টাটা হল আইসোলেশন হোস্টেল (আইআইএম কলকাতা), রামানুজন হোস্টেল (আইআইএম কলকাতা), লেক ভিউ হোস্টেল এবং নিউ হোস্টেল। এছাড়া প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় দুটি, বউবাজার থানা এলাকায় একটি, ট্যাংরা এবং তপসিয়া থানা এলাকায় একটি করে, শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকায় তিনটি, কড়েয়া থানা এলাকায় চারটি, একবালপুর থানা এলাকায় দুটি কনটেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া, আনন্দপুর ও সার্ভে পার্ক থানা এলাকাতেও রয়েছে একটি করে কনটেনমেন্ট জ়োন।
যে এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার মধ্যে ফ্ল্যাট এবং কমপ্লেক্স এলাকার সংখ্যাই বেশি। বস্তি এলাকায় কনটেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। সংক্রমণের হারও বস্তি এলাকাগুলিতে অনেকটাই বেশি। এর পাশাপাশি কলকাতার সীমিত কিছু এলাকায় বিশেষ নজরদারিও চালাবে পুর প্রশাসন।
কলকাতা পুরনিগমের কনটেনমেন্ট ২৫ টি জ়োনের মধ্যে বস্তি এলাকা রয়েছে চারটি আর বহুতল রয়েছে নয়টি। এছাড়াও পাঁচটি, পাঁচটি মিক্সড এরিয়া এবং চারটি হস্টেল আছে।
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ৭ নম্বর বরোতে। সেখানে ১০টি কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে। ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে চারটি কনটেনমেন্ট জোন।
আরও পড়ুন : Gangasagar Mela: বন্ধ রাখা হোক গঙ্গাসাগর মেলা, হাইকোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা