কলকাতা: বোলেরো গাড়ির মধ্যেই ফেটে যায় সিলিন্ডার। তারপর আগুন জ্বলতে জ্বলতেই খাদে গড়িয়ে পড়ে গাড়ি। বুধবারের এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৬ জন। আর গড়িয়ার শ্রীনগর এলাকার বাসিন্দারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে ভুঁইয়া পরিবার আর ফিরে আসবে না। ওই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে ওই দুর্ঘটনায়। এলাকার মানুষজন বলছেন, প্রায়ই বেড়াতে যেতেন মদন মোহন ভুঁইয়া, তাঁর স্ত্রী ঝুমুর ও ছেলে নীলেশ। শুধু তাই নয়, ট্রেকিং-এর নেশাও ছিল তাঁদের। আর সেই নেশাই যে সব শেষ করে দেবে, তা ভাবতে পারেননি আত্মীয়রা। বৃহস্পতিবারই তাঁদের দেহ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর পিন্টু দেবনাথ।
কাউন্সিলর জানিয়েছেন, পরিবারের প্রত্যেকেই খুব ভাল ছিলেন। এলাকার উন্নয়ের জন্য তাঁর সঙ্গে প্রায়ই আলোচনা করতেন মদন মোহন বাবু। কী ভাবে এলাকা সাজানো যায়, কী ভাবে পরিষ্কার রাখা যায়, সে সব নিয়ে কথা বলতেন। সব কাজেই এগিয়ে আসতেন বলে জানিয়েছেন পিন্টু দেবনাথ।
তিনি জানান, উত্তরকাশীতে ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন মদন মোহন বাবুরা। পেশায় বেসরকারি সংস্থার লাইব্রেরিয়ান ছিলেন মদন মোহন ভুঁইয়া, তাঁর স্ত্রী ঝুমুর ভুঁইয়া ছিলেন নিউ ব্য়ারাকপুরের এপিসি কলেজের লাইব্রেরিয়ান। আর ছেলে নীলেশ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। স্কুলে প্রথম বা দ্বিতীয় হতেনত তিনি। পরে রায়বরেলিতে পাইলট হওয়ার কোর্স করছিলেন। ফাইনাল ইয়ার চলছিল নীলেশের। বেড়াতে যেতে ভালবাসতেন তিনজনই। বছরে ২-৩ বার করে ঘুরতে যেতেন বলে জানা গিয়েছে। বিধায়িকা ফিরদৌসি বেগম ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেষ্টায় দ্রুত দেহ আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর।
মদন মোহন বাবুর ভাইপো নীলাদ্রি শেখর জানিয়েছেন, সোমবার বিকেলে বেরিয়ে যান তাঁরা। তিনি জানান, অনেকবার উত্তরাখণ্ড গিয়েছে ভুঁইয়া পরিবার। পাহাড়েই বেশি যেতেন বলেও জানা গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে মোট ৫ বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে ওই ঘটনায়। ৫৫ বছরের প্রদীপ দাস ও ৪৩ বছর বয়সী দেবমাল্যও ছিলেন গাড়িতে। এ ছাড়া গাড়ির চালক আশিসেরও মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলেই।