কলকাতা : শেষরক্ষা আর হল না। ‘রেফার’ রোগের শিকার হল ৮ মাসের শিশু। এসএসকেমে মৃত্যু হয় ওই রীতেশ বাগদির। দীর্ঘক্ষণ মস্তিষ্কে অক্সিজেন না যাওয়ায় মারা যায় ওই শিশু। গতকাল খেলতে খেলতে কাজলের কৌটো গিলে ফেলেছিল ৮ মাসের এক শিশু। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতাল করেছেন ওই শিশুর মা-বাবা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে এক হাসাপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে পাঠানো। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে শিশু। কিন্তু তাতে কোনও যায় আসে না চিকিৎসকদের বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের ঢিলেমিতেই শিশুর চিকিৎসা শুরু হয়েছিল দেরিতে।
প্রসঙ্গত, গতকাল খেলতে খেলতে হাত ফসকে গলায় চলে গিয়েছিল কাজলের কৌটো। সেই গোলাকৃতি কাজলের টুকরো গিলে ফেলে ছোট্ট রীতেশ। শুক্রবার সকাল ৭ টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। এরপরই আট মাসের শিশুর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গিয়েছিল ৫০-০ তে। শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এই অবস্থা দেখে নিউটাউনের বাসিন্দা সোমনাথ বাগদি তাঁর ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে প্রথমে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রীতেশকে রেফার করা হয় এনআরএসে। সেইসময় শিশুটি প্রবল শ্বাসকষ্টে কাতরাচ্ছিল। সেই অবস্থায় এনআরএসের জরুরি বিভাগ থেকে ইএনটি, ইএনটি থেকে শিশুশল্য বিভাগে দৌড়েছিলেন শিশুর বাবা। এই করতে গিয়ে নষ্ট হয় প্রায় দেড় ঘণ্টা। শিশুটির তখনও শ্বাস নেওয়ার প্রাণপন চেষ্টা করছে।
এত ঘুরেও এনআরএস এ চিকিৎসা পেল না শিশুটি। সাড়ে ন’টার সময় শিশুকে এসএসকেএমে রেফার করা হয়। সকাল ১০ টার সময় এসএসকেএমের এমার্জেন্সিতে রীতেশকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন শিশুটি মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। এসএসকেএম সূত্রের খবর, শিশুকে যখন এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হয় তখনই রীতেশের দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ৫০ শতাংশে নেমে গিয়েছে। এসএসকেএমে যখন রীতেশ পৌঁছয় তখন তাঁর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা যাচ্ছিল না। ল্যারিঙ্গোস্কোপি করে কাজলের বাক্স বার করা মাত্র শিশুটি শ্বাস নিতে শুরু করেছিল।
এসএসকেএমের চিকিৎসকদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন, এটা অবিশ্বাস্য যে, ল্যারিঙ্গোস্কোপির পরিকাঠামো এনআরএসের মতো মেডিক্যাল কলেজে নেই। শিশুর যেখানে ৫০ শতাংশ অক্সিজেনের মাত্রা নেমে গিয়েছে সেখানে উপযুক্ত চিকিৎসা না করে মরণাপন্ন শিশুকে রেফার করা ঠিক হয়নি। শিশুটির বাবা বলেছিলেন, “এনআরএস থেকে আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমার ছেলেটা তখন প্রবল শ্বাসের সমস্যায় ভুগছে। দেড় ঘণ্টা এনআরএসেই এদিক-ওদিক ঘুরছিলাম। কোনও চিকিৎসাই হয়নি সেখানে। প্রথমে বলল ৩ নম্বর গেটে যেতে, ওখানে গিয়ে ডাক্তারবাবুরা বললেন এখানে হবে না। এই বিভাগ ওই বিভাগ ঘোরাচ্ছিলেন সকলে। তারপর এসএসকেএমে চিকিৎসা হয়।”
আরও পড়ুন : Cyber Crime : সাইবার ক্রাইম রোধে বাংলাই পথ দেখাবে! স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে বাংলার জয়গান