
কলকাতা: ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে পরিচয়। সরাসরি দেখা করতে এসে সর্বস্ব খুইয়েছিলেন নিউ ব্যারাকপুরের লেলিনগরের বাসিন্দা সুদীপ বোস। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে রমা সাউ নামে এক মহিলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর রমা সাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক বাংলাদেশি যুবক। ধৃতের নাম এম মাহমুদুল হাসান। রমা সাউয়ের সঙ্গে ওই বাংলাদেশি যুবকের কী সম্পর্ক? পুলিশের তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশ জানিয়েছে, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে পরিচয়ের পর গত ১ জুলাই সুদীপ বোস দমদম বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি হোটেলে রমা সাউয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। রমা সাউয়ের প্রকৃত নাম জিয়া সিং। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে ভুয়ো পরিচয় দিয়েছিলেন। অভিযোগপত্রে সুদীপ জানান, হোটেলে তাঁকে চা খেতে দেন জিয়া। চা খাওয়ার পর অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। তখন সুদীপের মানিব্য়াগ, ফোন নিয়ে চম্পট দেন ওই মহিলা।
জ্ঞান ফেরার পর সুদীপ ওই মহিলার ফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন। কিন্তু, যোগাযোগ করা যায়নি। এরপরই বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ফাঁদ পাতে। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ফোন করে বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি হোটেলে দেখা করতে বলে। প্রথমে নিমরাজি হলেও অবশেষে ওই মহিলা দেখা করতে রাজি হন। তারপর দেখা করতে এলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
জিয়া সিংকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মাহমুদুল হাসানের নাম জানতে পারে পুলিশ। জিয়ার সঙ্গে কী সম্পর্ক বাংলাদেশি নাগরিক মাহমুদুলের? জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, সুদীপ-সহ একাধিক ব্যক্তিকে এভাবে প্রতারণার পর যে মোবাইলগুলি ছিনতাই করতেন জিয়া, সেগুলি তিনি মাহমুদুলকে বিক্রি করতেন। তাই, মাহমুদুলকে ধরতে জিয়াকে দিয়েই ফাঁদ পাতা হয়। জিয়া মাহমুদুলকে জানান, তিনি একটি ফোন বিক্রি করবেন। সেইমতো বাংলাদেশের রাজশাহীর ওই যুবক দমদম স্টেশনের কাছে আসতেই তাঁকে ধরা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে মাহমুদুল জানিয়েছেন, অনলাইনে পুরনো জিনিস কেনাবেচার একটি সাইটের মাধ্যমে জিয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এখনও পর্যন্ত জিয়ার কাছ থেকে তিনি ১০টি মোবাইল কিনেছেন। আর সেই মোবাইলগুলি বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছেন।
মাহমুদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গিয়েছে, ভারতে এসে প্রত্যেকবার আলাদা হোটেলে উঠতেন তিনি। এবার ভারতে আসেন গত ১৫ জুলাই। পার্কস্ট্রিটের একটি অতিথিশালায় উঠেছিলেন তিনি। ওই অতিথিশালার মালিক জানিয়েছেন, অত্যন্ত চুপচাপ থাকতেন মাহমুদুল। কারও সঙ্গে কথা বলতেন না। সকালে বেরিয়ে যেতেন। রাতে ফিরতেন। কার সঙ্গে কোথায় যোগাযোগ রাখতেন, সেটা তাঁদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।