
কলকাতা: জাল আধার নিয়ে চাপানউতোর কম নেই। এবার জাল আধার তৈরির চক্র নয়, রাজ্যে চলছিল জাল আধার সেন্টার। জালিয়াতির মাধ্যমে আসল আধার বানানোর সক্রিয় চক্র। অভিযোগ এমনটাই। এই প্রথম কোনও বৈধ আধার সেন্টারের মাধ্যমে আধার কার্ড জালিয়াতি চক্রের কারবার সামনে এল। তাতেই শোরগোল প্রশাসনিক মহলে। বেঙ্গল STF এর অভিযানে বন্ধ আধার সেন্টারের জালিয়াতি। জালে চক্রের দুই জালিয়াত।
সম্প্রতি বীরভূমে অভিযান চালিয়ে শেখ মীরাজ হোসেন ও আব্দুল কুদ্দুস নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে STF। কীভাবে চলছিল এই চক্র? UIDAI কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক আধার সেন্টারের সঙ্গে একটি ল্যাপটপ ও তার MAC আইডিকে চিহ্নিত করে দেয়। সেই ল্যাপটপ ছাড়া আধারের কোনও কাজ করা যাবে না। সঙ্গেই ওই আধার সেন্টারের সঠিক অবস্থান ও আধারের জন্য একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নথিভুক্ত করে দেয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ওই নির্দিষ্ট লোকেশনে নির্দিষ্ট ল্যাপটপ ছাড়া আধার তৈরির কোন কাজ করতে পারবেন না। আধার কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারবেন না, কাজ করবে না সার্ভারও। এত কড়া নিয়ম সত্ত্বেও সব নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছিল আধার সেন্টারের ল্যাপটপের মাধ্যমে অন্য লোকেশন থেকে আধার তৈরির কাজ।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা বিমানবন্দরের খুব কাছে একটি জায়গা থেকে বীরভূমের আধার সেন্টারের ওই ল্যাপটপের মাধ্যমে চলছিল আধার কার্ড তৈরির কারবার। কীভাবে কারসাজি করেছিল জালিয়াতরা? গোয়েন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আধার সেন্টারের জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া ল্যাপটপের ম্যাক আইডি প্রথমে মাস্কিং করছিল জালিয়াতরা। তারপর জিপিএস রিসিভারের মাধ্যমে লোকেশন বদলে দিচ্ছিল। অর্থাৎ কলকাতা বিমানবন্দর সংলগ্ন জায়গাটিতে বসে যখন আধারের কাজ করছে তখন UIDAI কর্তৃপক্ষ দেখছে বীরভূমে বসেই কাজ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের ফিঙ্গারপ্রিন্ট কেও কারসাজির মাধ্যমে ব্যবহার করা হচ্ছে অন্য লোকেশন থেকেই।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই চক্রে যুক্ত বিধান মুর্মুর নামে বীরভূমে আধার সেন্টার ছিল। তার সেই আধার সেন্টারের ল্যাপটপের MAC ID মাস্ক করে এয়ারপোর্ট সংলগ্ন জায়গা থেকে আধার বানানো হচ্ছিল। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, এই জালিয়াতির মাধ্যমে অনেক বাংলাদেশি ভারতীয় আধার কার্ড বানিয়ে নিয়েছে। সেজন্য ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে দেখা হচ্ছে কত সংখ্যক আধার কার্ড বানিয়েছে এই চক্রের মাথারা। এই চক্রে বীরভূম ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটির এক বাসিন্দা ও উত্তর প্রদেশের এক বাসিন্দা যুক্ত রয়েছে বলে খবর। তাদের খোঁজ চলছ।