
কলকাতা: চিকেন প্যাটিসকাণ্ডে বেসুরো তমলুকের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম না করে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অভিজিৎ। দলের একাংশকে ‘কুলাঙ্গার’, ‘ক্লাস ফোরের বিদ্যা’ বলেও কটাক্ষ করেন অভিজিৎ। ঘটনা প্রসঙ্গে ওই সংবাদমাধ্য়মকে অভিজিৎ বলেন, “যারা এসব করে বেড়াচ্ছেন, এই সব কুলাঙ্গার…” বলেই থামেন অভিজিৎ। দৃশ্যত বিরক্ত। তারপর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “কুলাঙ্গার বলতেই হবে, কারণ আমি দেখলাম, যারা অভিযুক্ত, তাদের মধ্যে বিজেপির একটি অংশ রয়েছে। প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধর…ভাবতে পারেন! একজন একটা বাক্স মাথায় করে নিয়ে যান। তাতে কিছু খাবার থাকে। যেখানে ভিড় দেখেন, তাঁরা সেখানে যান। এটা তাঁদের উপার্জনের উপায়। তাঁর যে কায়িক শ্রম, তার প্রতি কোনও দরদ নেই। সেই শ্রমের প্রতি কোনও দরদ নেই। তাঁকে মারছে, বাক্সটাকে ভেঙে দিচ্ছে, তাঁর পুঁজিটাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।”
যাঁরা এই সমস্ত কাজ করেছেন, তাঁদেরকে দল থেকে অবিলম্বে বিতাড়িত করার কথা বলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, এই ‘নিম্ন রুচির’ বিষয় নিয়ে কীভাবে বাংলায় রাজনীতি হতে পারে। নাম না করে অভিজিৎ খোঁচা দিয়েছেন, “কোনও পড়াশোনা তো নেই ওদের। হয়তো অনেক ডিগ্রি অর্জন করেছে। কিন্তু ক্লাস ফোরের চেয়ে বিদ্যা তো বেশি এগিয়েছে বলে মনে হয় না। একজন খেটে খাওয়া মানুষকে মেরে দিচ্ছে, উপার্জনের উপায় নষ্ট করছে। যারা দরিদ্র, তাদের শোষণ করছে। ক্লাস ফোরের বিদ্যা নেই, মশা মাছি তাড়ায়, তারা এসব বলে বেড়াচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, ব্রিগেডে গীতাপাঠের দিন এই চিকেন প্যাটিসকাণ্ডের সূত্রপাত। । অভিযোগ , গীতাপাঠের দিন কেন ব্রিগেডে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করা হবে। দুই বিক্রেতাকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। চলে কিল-চড়-ঘুষি। একজনকে কান ধরে ওঠবস করতেও বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পরে দুই প্যাটিস বিক্রেতা শেখ রিয়াজুল এবং মহম্মদ সালাউদ্দিন অভিযোগ দায়ের করেন ময়দান থানায়। রুজু করা হয় এফআইআর।
এরপরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়। যদিও পরে তাঁরা জামিন পান। এরপর ওই তিন জনের পক্ষে সওয়াল করেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি ব্যক্তিগতভাবে তিনজনের জন্য বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে দেবেন বলে জানান। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকেও তীব্র আক্রমণ করেন। বিষয়টি নিয়ে চরম বিতর্ক হয়। এবার নাম না করে দলেরই সেই একাংশের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু সেই একাংশের মধ্যে ঠিক কারা রয়েছেন? কাদের ইঙ্গিত করলেন অভিজিৎ? শুভেন্দু যেখানে অভিযুক্তদেরই নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছিলেন, সেখানে অভিজিৎ তাঁদের দল থেকে বিতাড়িত করার ডাক দিচ্ছেন! ইঙ্গিত কার দিকে, তা নিয়েই কাটাছেঁড়া চলছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। উল্লেখ্য, তমলুকের সাংসদকে এর আগেও তমলুকে দলেরই একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দেখা গিয়েছিল। এবার সরাসরি টার্গেট কে?