কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসায় কাঁকুরগাছির অভিজিৎ সরকার খুন হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন তাঁর দাদা-মা। হাইকোর্টে সেই বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন অভিজিতের পরিবার। আদালতের নির্দেশে দাদা বিশ্বজিতের বাড়িতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। এই নির্দেশের পর অভিজিতের বাড়ির বাইরে কলকাতা পুলিশের কর্মী মোতায়েন করা হয়। এবার উঠল আরও বিস্ফোরক অভিযোগ। কলকাতা পুলিশের যে নিরাপত্তা কর্মী বাইরে মোতায়েন ছিলেন, তিনি রাতে বসে উর্দি পরেই মদ্যপান করছিলেন বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই থানায় ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্বজিতের অভিযোগ, রাতে যে পুলিশকর্মী তাঁর বাড়ির বাইরে কর্তব্যরত ছিলেন, তিনি মদ্যপান করছিলেন। সাদা উর্দির ওপর একটি নীল রঙের টি শার্ট পরে তিনি মদ খাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। বিশ্বজিতের আরও অভিযোগ, এই প্রথম নয়, এর আগেও তিনি একই কাজ করেছেন। কিন্তু সেবার বিশ্বজিৎ থানায় বিষয়টি জানাননি। তাঁর বক্তব্য, যে পুলিশ কর্মী নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি যদি মদ্যপই থাকেন, তাহলে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে আদৌ কী পদক্ষেপ করবেন বা পদক্ষেপ করার মতো অবস্থায় থাকবেন।
বিশ্বজিতের দাবি, মদ্যপ অবস্থায় তিনি ওই পুলিশ কর্মীকে হাতেনাতে ধরে ফেলতেই পালিয়ে যান। এখনও পর্যন্ত তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। মঙ্গলবার রাতেই থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান। বিশ্বজিতের বক্তব্য, থানায় অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও রকমের পদক্ষেপ করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, একুশের নির্বাচনের পর ভোট গণনার দিন কাঁকুরগাছির বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। এরপর জল গড়ায় বহুদূর। প্রথমে এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে বিস্তর অভিযোগ করেন তাঁর দাদা। তিনি সিবিআই তদন্তের দাবিতে লড়াই চালাচ্ছিলেন। এরপর তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে। তাঁর দাবি, অভিজিৎ সরকারের মৃত্যু মামলায় ১০ জন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। তারা জেলবন্দি। সেই জেলবন্দিদের পরিবারের লোকজনই সরকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এরপরই হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা তাঁর বাড়ির বাইরে কলকাতা পুলিশের কর্মী মোতায়েন করার নির্দেশ দেন। এরপর সেই নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়েই বিশ্বজিতের অভিযোগ।