কলকাতা : ডিএ নিয়ে আন্দোলনের (DA Agitation) ঝাঁঝ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। শুক্রবারই রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। যদিও ধর্মঘট ঠেকাতে আগে থেকেই আঁটঘাঁট বেঁধে মাঠে নামে সরকার। যদি কোনও সরকারি কর্মচারী যথাযথ কারণ ছাড়া এদিন ছুটি নেন তাহলে তা ব্রেক ইন সার্ভিস হিসাবে গণ্য হবে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল সরকার। এরইমধ্যে এদিনই বজবজে নবনির্মিত চড়িয়াল সেতুর উদ্বোধন করলেন ডায়মন্ড-হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে এদিনই এতবড় কর্মযজ্ঞ সামলানোর জন্য সরকারি কর্মীদের বাহবাও দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। জানালেন কুর্নিশ। একইসঙ্গে ডিএ আন্দোলনকারীদের দিল্লি দিয়ে আন্দোলন করার ‘পরামর্শও’ দিলেন তিনি।
এদিনের মঞ্চ থেকে অভিষেক বলেন, “ডিএ আন্দোলনকারীরা ধর্মঘট ডেকেছেন। তাঁদের মৌলিক অধিকার, তাঁরা ডাকতেই পারেন। যদিও আমি মনে করি এই কর্মনাশা-ধর্মনাশা বনধ আর বাংলার মানুষ সমর্থন করে না। এই দিনই একটা সরকারি অনুষ্ঠান থেকে ৫২ কোটি টাকার ব্রিজের উদ্বোধন ডায়মন্ড-হারবারের মাটি থেকে হচ্ছে। সমস্ত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে নিজের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ১০ কোটি মানুষের স্বার্থের কথা ভেবে যাঁরা উন্নয়নের জন্য নিজেদের নিমজ্জিত করেছেন তাঁদের আমি কুর্নিশ জানাই। এটাই ডায়মন্ড-হারবার মডেল।”
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন, “যে অবরোধ হচ্ছে, বনধের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে মারা হচ্ছে ঝান্ডা দিয়ে, গাড়ির উপর আক্রমণ করা হচ্ছে, সেখানে সেই সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে এলাকার মানুষের স্বার্থে কাজ করে আজকে তাঁদের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করেছেন। আমি কুর্নিশ জানাই জেলা প্রশাসনের প্রত্যেক সরকারি কর্মীদের।” পাশাপাশি ফের এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুললেন তিনি। একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার কাজের টাকা না দেওয়া নিয়ে সুর চড়ালেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের রাজ্য সরকারকে দেওয়ার কথা। কিন্তু, তা এখনও দেয়নি। একুশের ভোটে মুখ থুবড়ে পড়ার পর কেন্দ্রের বিজেপি সরকার টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। গায়ের জোরে টাকা আটকে রেখেছে। আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনীতিক রং দেখি না। আমার মতে ভোটের ৬ মাস আগে প্রতিটা রাজনৈতিক দলের নিজের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকতেই পারে। কিন্তু ভোটে যেটার পর শুধুই কাজ।” এরপরেই আবাস যোজনার নাম বিতর্কেও কেন্দ্রেকে কটাক্ষ করেন অভিষেক। বলেন, “এই যে চড়িয়াল সেতু এই নাম কখনও অভিষেক সেতু হতে পারে? যে অঞ্চলের কাজ সে অঞ্চলের নামে হবে। তাহলে বাংলার আবাস যোজনা কেন প্রধানমন্ত্রীর নামে হবে।” এ কথা বলে ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য়ে অভিষেকের পরামর্শ, “যাঁরা আন্দোলন করছেন ডিএ নিয়ে তাঁদের বলব দিল্লির বুকে গিয়ে আন্দোলন করুন।”