
কলকাতা: বছর বছর নতুন দাওয়াই। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার চিত্র কোন পরিবর্তন নেই। গত বছর কলকাতা পুরনিগমের বেহাল রাস্তার ‘ওষুধ’ ছিল প্লাস্টিক দিয়ে রাস্তা তৈরি। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বৃষ্টির জমা জলে গর্ত বা খানাখন্দ বেরিয়ে কঙ্কাল দশা শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার। এবার কলকাতা পুরনিগমের নয়া দাওয়াই ‘পেভার ব্লক’।
পুরনিগমের দাবি, পিচের অন্যতম শত্রু জল। তাই জমা জলেই পিচ ধুঁয়ে চলে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। টাকা খরচ করেও কোন সুবিধা হচ্ছে না। তাই এবার কলকাতা পুরনিগম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলি পিচের বদলে পেভার ব্লক বসানো হবে। ইতিমধ্যে কলকাতায় বেশ কয়েকটি রাস্তায় পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে সেই পেভার ব্লক বসানোও হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী সমাধান নিয়ে তারপরেও চাপানউতোর কমছে না। পুরনিগমের অন্দরে প্রশ্ন, প্রতিবছর নতুন নতুন ওষুধ ব্যবহার না করে, স্থায়ীভাবে সমস্যার সমাধানে কেন কোনওরকম তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না?
এদিকে পেভার ব্লক গোটা শহরে বসানো যথেষ্ট ব্য়য়সাপেক্ষ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। কিন্তু কোষাগারে তো টান। তাহলে উপায়? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে পুরনিগমের অন্দরে। এদিকে যে কোনও মেরামতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উন্নতমানের উপকরণ বা উপাদান। নির্মাণ বিশেষজ্ঞদের দাবি, অর্থ বরাদ্দ হলেও খারাপ মানের উপকরণের জন্যই রাস্তা টিকছে না। যে কারণে বিপদ বাড়ছে। সামান্য জল হলেই রাস্তার জোড়া-তাপ্পি লাগানো পিচের প্রলেপ উঠে চলে যাচ্ছে।
গর্ত তৈরি হচ্ছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। যে কারণে শহরের গতি ধীর হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে একের পর এক দুর্ঘটনা। জাতীয় পরিবেশ আদালত থেকে ম্যাস্ট্রিক অ্যাসফোল্ট নিষিদ্ধ করার পর কলকাতা পুরনিগমের তরফে বিকল্প ভাবনায় দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে। যে কারণে জোড়া-তাপ্পি দিতে গিয়ে উল্টে বাড়ছে বিপদ। মত ওয়াকিবহাল মহলের। এখন নতুন এই পেভার ব্লকের ভাবনা আদৌ কতটা যথোপযুক্ত হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়ে গিয়েছে খোদ পুরনিগমের সড়ক বিভাগের মধ্যেই।