
কলকাতা: রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বা এজি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। এরপর ১৭-১৮ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও রাজ্যের তরফে নতুন এজির নাম ঘোষণা হয়নি। এদিকে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। সূত্রের খবর, রাজভবনে ফাইলবন্দি হয়ে রয়েছে পরবর্তী এজির নাম। প্রশ্ন উঠছে, এখানেও কি কোনওভাবে রাজ্য-রাজভবন দ্বন্দ্ব কাজ করছে? আরও একটি সূত্রের খবর, নতুন এজি কে হবেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই টানাপোড়েন চলছে।
গত ১০ নভেম্বর সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ইমেল মারফত বিদেশ থেকে ইস্তফা দেন। পরে ১৭ নভেম্বর সশরীরে রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দেন তিনি। সব মিলিয়ে ১৮ দিন পার। এখনও কেউ এজি পদে বসলেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় পরপর বদল হয়েছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। কেউ কেউ প্রকাশ্যেই বলেছেন, রাজ্য সরকারের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে পদ থেকে সরে গিয়েছেন তাঁরা। সম্প্রতি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ও তেমনই বলেছেন। মান সম্মান নিয়ে সরে আসার কথা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
হাইকোর্টের অন্দরের খবর, এজি হিসাবে আবারও কিশোর দত্তকে আনা হতে চলেছে এই পদে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ২০২১ সালেই এজি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁকে যদি আবার ফেরানোও হয়, সেক্ষেত্রে নাম স্থির হলে টালবাহানা কেন, সে প্রশ্নও উঠছে।
রাজ্যের আইনজীবী মহল সূত্রে খবর, সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের ইস্তফার পরই রাজভবনে ফাইল চলে যায়। কিন্তু রাজভবন জানতে চায়, কেন একটিমাত্র নামই পাঠানো হয়েছে? যদিও আইন অনুসারে এজি হিসাবে একের বেশি নাম যে পাঠাতেই হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু নেই বলেই খবর। আবার বেশি পাঠানোর দাবি কেউ করলেও কোনও প্রশ্ন তোলা যাবে না। আর এই জটেই আটকে রয়েছে নতুন এজির নিয়োগ ফাইল।
আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্যের মতো বিশিষ্ট আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আইনে রাজ্যের এজির পদ শূন্য রাখা যায় না। কোথাও গিয়ে রাজ্যের কাছে এটা দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য সরকার বাইরের আইনজীবী দিয়ে রাজ্যের মামলা করাচ্ছেন।
যদিও আরও একটি সূত্রের খবর, আড়াই বছর আগে যিনি পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, তাঁকে আবারও এনে অস্বস্তির পথে হাঁটতে কিছুটা দ্বিধায় থাকতে পারে নবান্ন। তবে জট যাই হোক, রাজভবন থেকে ফাইল ফেরত পাঠানো হলে শুরু হবে সাংবিধানিক সঙ্কট। কারণ, বিকাশবাবুর মতো দুঁদে আইনজীবীরাই বলছেন, রাজ্যের এজি পদ শূন্য রাখা যায় না।