কলকাতা: বনদফতরের মহিলা আধিকারিকের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ। সেই জল গড়াল প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত। সূত্রের খবর, অখিলের আচরণে ক্ষুব্ধ প্রশাসনের শীর্ষ স্তর। জানা যাচ্ছে, অখিলের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে অখিলের ইস্তফা চায় দল। মহিলা আধিকারিককে হুমকির ইস্যুতে নড়েচড়ে বসেছে দল।
এর আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠেছিল অখিলের বিরুদ্ধে। সে সময়ে আসরে নামতে হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবার এক মহিলা রেঞ্জ অফিসারের সঙ্গে এহেন আচরণে মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত অসন্তুষ্ট বলে খবর। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, যেখানে মহিলা ভোটব্যাঙ্ককে এতটা জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে দাঁড়িয়ে তাঁরই প্রশাসনের এক আধিকারিকের উদ্দেশে তাঁরই মন্ত্রীর এহেন আচরণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত বিরক্ত। সোমবারই ক্যাবিনেট বৈঠক রয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানেও মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষের মুখে পড়তে পারেন কারামন্ত্রী। তিনি ভর্ৎসনার মুখে পড়তে পারেন বলে খবর। সূত্রের খবর, দল চাইছে অখিল গিরি নিজে থেকেই ইস্তফা দিন।
সূত্রের খবর, দলের অন্দরেই অভিযোগ উঠছে, অখিল গিরির জন্যই তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। একুশের জুলাইয়ের মঞ্চ থেকেই খোদ নেত্রী বার্তা দিয়েছেন, যাঁতে তাঁর দলের মহিলা কর্মীদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়। দলের সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের নিজেদের আচরণ সংযত রাখারও পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক। সামনেই ছাব্বিশের নির্বাচন। তার আগেই যদি দলের এক মন্ত্রী এক প্রশাসনিক পদাধিকারীর উদ্দেশে ‘জানোয়ার’, ‘বেয়াদপ’, দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যাচ্ছে। অখিলকে নিয়ে এহেন বিতর্ক তৈরি হয়, তা দলের কাছেও যথেষ্ট অস্বস্তির।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কারামন্ত্রীকে ফোন করেছেন সুব্রত বক্সী। নিঃশর্তে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর। জানা যাচ্ছে, নির্দেশ এসেছে, ‘ক্ষমা চান এবং পদত্যাগ করুন’। যদিও রবিবার সকালে সাংবাদিকদের সামনে কারামন্ত্রী নিজের ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, “আমি একটু রাগান্বীত হয়ে যে কথা বলে ফেলেছি, যে আচরণ করে ফেলেছি, সেটা ঠিক নয়। সেই কথাটা বলা অনুচিত। এক জন আধিকারিককে যে কথা বলেছি, সেটা নিশ্চিত ভাবে আমার বলা ঠিক হয়নি।” তবে তিনি এও বলেছেন, “ওঁর কথাবার্তাটা ঠিক নয়। বর্তমান যে রেঞ্জার, এখন কন্ট্রাক্টে আছেন, তাঁদের জেলা প্রশাসনেরও কেউ পছন্দ করেন না। ওঁ পরিস্থিতিটা জটিল করেছেন।” উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে কারামন্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি করছেন খোদ বনমন্ত্রী।