পূর্ব মেদিনীপুর: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই পদত্যাগের ঘোষণা কারামন্ত্রী অখিল গিরির। অখিল গিরি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “কালই (সোমবার) পদত্যাগ করব, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেব।” তিনি বলেন, “দলের হয়তো মনে হয়েছে, আমার জন্য ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। পদত্যাগ করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকব।” চাপের মুখে শেষমেশ পদত্যাগের সিদ্ধান্ত অখিলের। তবে তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই ওই মহিলা আধিকারিকের কাছে ক্ষমা চাইবেন না। যেখানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে বিতর্কিত কথা বলেছিলেন অখিল গিরি, তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে খোদ ময়দানে নেমেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। সেখানে অখিল গিরিকে ক্ষমা চাইতে দেখা গেল না।
তমলুকে দখলদার উচ্ছেদ করতে গিয়ে অখিল গিরির ‘অভব্য আচরণের’ মুখে পড়েন এক মহিলা বন আধিকারিক। তার জল গড়াল প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত। ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছিল, অখিলের ইস্তফা চাইছিল দলই। সোমবার বিধানসভাও অখিল গিরি ইস্যুতে তপ্ত হতে পারত, সেই আঁচ মিলছিল। তার আগেই রবিবার অখিলের কাছে যায় সাংসদ সুব্রত বক্সীর ফোন। মিনিট পনেরোর কথা হয়। জানা যায়, ফোনে বলা হয়, ‘নিঃশর্ত ক্ষমা চান, পদত্যাগ করুন’। বেলা আড়াইটে নাগাদ যায় ফোন। তিনটের মধ্যেই অখিল গিরি ঘোষণা করে দেন, সোমবারই পদত্যাগ করবেন তিনি। অখিল গিরির কথায়, “আমি দলের নির্দেশ মানব। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পদত্যাগ করার জন্য সুব্রত বক্সীকে বলেছিলেন। সুব্রত বক্সী আমাকে ফোন করে সে কথা বলেন। আমি পদত্যাগ করব। পদত্যাগপত্র আমি ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি। আমি কালকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র দিয়ে দেব। দল কঠোর হলে হবে। অসহায় মানুষগুলোর পাশে রয়েছি। যাতে কোনওভাবে বঞ্চিত না হয় ওরা।” তিনি স্পষ্টই জানালেন, “ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।”
শনিবার কার্যত ঠিক এই সময়েই তমলুকের একটি খণ্ডচিত্র গোটা বাংলায় শোরগোল ফেলে দেয়। তাজপুরে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ নিয়ে যে পর্বের সূচনা হয়েছিল, তাতে মহিলা বনদফতরের আধিকারিকের উদ্দেশে কারামন্ত্রী অখিল গিরি দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। অখিলকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনার আয়ু ৭-৮ দিন, ১০ দিন!’’ মন্ত্রী সময় দিয়েছিলেন ৭-১০ দিন। কিন্তু সেই সময়সীমার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মন্ত্রিত্ব হারাতে চলেছেন অখিল।