সৌরভ গুহ: পাড়ায় শীতলা পুজো। সঙ্গে রক্তদান শিবির। তার জন্য পোস্টার, ফ্লেক্স পড়েছে এলাকায়। সেই ফ্লেক্স, পোস্টারই উস্কে দিল তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী কোন্দলে’র আগুন। কলকাতার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুনন্দা সরকারের এলাকায় এই অনুষ্ঠান। এদিকে এই ওয়ার্ডেই রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। অভিযোগ, যে ফ্লেক্স, পোস্টার লাগানো হয়েছে তাতে মন্ত্রীর নাম রয়েছে, অথচ বাদ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের নাম। এরপরই কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠরা ওয়ার্ডে পোস্টার টাঙানোয় বাধা দেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয় যে থানা অবধি গড়ায় তা।
কলকাতার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ে গরাণহাটা স্ট্রিট। সেখানেই আগামী ৪ এপ্রিল রক্তদান শিবির করছে স্থানীয় একটি ক্লাব। পরদিন অর্থাৎ ৫ এপ্রিল শীতলা পুজোও করছে তারাই। স্থানীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরেই এই ক্লাবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাশে থাকেন মন্ত্রী শশী পাঁজা। অন্যদিকে এই ওয়ার্ডে এবার ভোটে জিতেছেন তৃণমূলের সুনন্দা সরকার। অভিযোগ, পুজো ও রক্তদান শিবিরের পোস্টারে ক্লাব কর্তৃপক্ষ মন্ত্রীর সঙ্গে আরও এমন কিছু নাম রেখেছেন যাঁদের নাম না রাখলেও কিছু যেত আসত না। অথচ যিনি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি তাঁর নামই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, এরপরই সুনন্দা সরকারের অনুগামীরা এলাকায় ব্যানার টাঙাতে বাধা দেন।
এতেই জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কাউন্সিলর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বরতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। লিখিত ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কিছু দুষ্কৃতী পোস্টার, ব্যানার খুলে দিয়েছে। এরপরই পাল্টা থানায় যান কাউন্সিলরের অনুগামীরা। তাঁদের দাবি, কেন এভাবে তাঁদের দুষ্কৃতী বলে আখ্যা দেওয়া হল? এই কোন্দল ঘিরে গত দু’দিন ধরে সরগরম ১৮ নম্বর ওয়ার্ড।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শশী পাঁজা বলেন, “এটা একটা অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান। এর মধ্যে রাজনীতির নামগন্ধও নেই। রক্তদান শিবির করছে। আমরা এরকম অনুষ্ঠানে গিয়েও থাকি। কিন্তু কথা হল, তার জন্য কেউ ফ্লেক্স নামিয়ে দেবে? কে কোন উদ্দেশে ফ্লেক্স নামাল, পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ক্লাবের লোকেরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।”
অন্যদিকে এলাকার কাউন্সিলর সুনন্দা সরকার বলেন, “ওই ক্লাব কর্তাদের ভিতরে বৃন্দাবন কর্মকার বলে একজন আছেন। উনি বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। ক্লাবের নামে অন্য কোনও উদ্দেশ্য এখানে রয়েছে কি না সেটাও দেখতে হবে। আর ওরা পুলিশের কাছে অভিযোগে আমাদের, তৃণমূলকর্মীদের দুষ্কৃতী বলেছে। এটা আমরা কখনওই মেনে নেব না। আমার অনুগামী যাঁরা, যাঁরা সুনন্দা সরকারকে ১২ হাজার ভোটে জিতিয়ে এনেছে তাঁদের কোনও দাবি থাকতে পারে। তাঁদের কথাও তো শুনতে হবে।”