কলকাতা : বদলি নিতে হলে দিতে হবে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা! এজলাসে বসে বিস্ফোরক সেই অডিয়ো রেকর্ডিং শুনলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আবেদনকারী এবং ম্যানেজিং কমিটির মেম্বারের কথোপকথনের বয়ান হলফনামা আকারে চেয়ে পাঠালেন বিচারপতি। পশ্চিম মেদিনীপুরের মানসুকা লক্ষ্মী নারায়ণ হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক গণেশ রজক তাঁর বদলির আবেদন করেছিলেন। প্রথম দফায় স্কুলের তরফে তাঁর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। পরে একজনের মারফত ম্যানেজিং কমিটির সদস্য অসিত গোস্বামীর সঙ্গে কথা হয় ওই সহকারী শিক্ষকের। অভিযোগকারীর বক্তব্য, তখনই ম্যানেজিং কমিটির সদস্য অসিত বাবু ওই সহকারী শিক্ষকের থেকে ফোনে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। বলা হয়, বাকিরাও টাকা দিয়ে গিয়েছে। ওই অডিয়ো রেকর্ডিং শোনার পর বিচারপতি জানিয়েছেন, সব কিছু লিখিতভাবে আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) আদালতে পেশ করতে হবে মামলাকারীকে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে।
বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যে রেকর্ডিংটি শোনা হয়, তাতে শোনা যাচ্ছে ওই সহকারী শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যকে জানাচ্ছেন, “দেখুন না আমার ঘরের অবস্থা খুব খারাপ। অত টাকা দিয়ে… আমি বলছি তো ২৫ হাজার টাকা আমি রাজি আছি। এর মাধ্যমে আপনারা করে দিন।” এর উত্তরে দ্বিতীয় ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “এমনিতেই যারা চলে যাচ্ছে, তারা ২০-২৫ দিচ্ছেন। এবার আপনি যেটা বলছেন… আমরাও চাইছি যে আপনি একটু কনট্রিবিউট করুন।” তখন ওই সহকারী শিক্ষক বলছেন, ” দেখুন, আমি যদি পারতাম, আমি অবশ্যই কনন্ট্রিবিউট করতাম। আমি আপনাকে বললাম না, আমরা শুরু থেকেই কনট্রিবিউট করে আসছি স্কুলে।” এই কথা শোনার পর ওই ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জানান, “আচ্ছা, আমি অন্যান্য ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলি একটু।” যদিও এই গোটা কথোপকথনের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিককালে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের তৎকালীন কর্তাদের ইতিমধ্য়েই একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিবিআই অফিসাররা। টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এরই মধ্যে এবার শিক্ষকদের বদলির জন্যও টাকার দাবি ওঠায় ফের একবার অস্বস্তি বাড়ছে সরকারের।