কলকাতা: রোববারের বাজার। সকাল থেকে টানা বৃষ্টি। এমন ওয়েদারে খিচুরি আর ডিমভাজা হলে কেমন হয়! গিন্নিকে প্রস্তাব দিলেন ভট্টদা। আর সেই প্রস্তাব পত্রপাট খারিজ করে দেন গিন্নি। তিনি বলেন, আজ স্পেশাল মেনু হবে। লোলুপ দৃষ্টিতে ভট্টদার জিজ্ঞাসা, কী মেনু! গিন্নি বলেন, খিচুড়ি আর ব্যালট ভাজা। তা শুনে অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম ভট্টদার। এমন দৃশ্য আপনার রান্নাঘরে হবে কি না হলফ করে না বলতে পারলেও, নেটিজেনদের ঘরে কিন্তু ব্যালট দিয়ে নানা রেসিপির রান্না চলছে জোরকদমে। আর সেই রান্না পোস্টও করছেন তাঁরা। ব্যালট ভাজা, ব্যালট চচ্চরি এমনকী ব্যালট বিরিয়ানিও। আকাশছোঁয়া বাজার দরে হঠাৎ ব্যালট নিয়ে পড়লেন কেন নেটিজেনরা? সৌজন্যে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাবড়ার ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী’ প্রার্থী মহাদেব মাটি। তিনি ব্যালট খেয়ে প্রমাণ করেছেন বাঙালির রসনায় এই বস্তুটির গুরুত্ব অপরিসীম। যদিও ব্যালট খাওয়ার বিষয়টি বিরোধীদের অভিযোগ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মুহূর্তে উপচে পড়ছে ব্যালট-মিমের জোয়ার। কেউ লিখছেন ব্যালটের রেসিপি, কেউ আবার বলছেন, ব্যালটই এখন ফুড ভ্লগারদের ‘ফেভারিট সাবজেক্ট’। এমনকী ফেসবুকে একটি পেজও এই মুহূর্তে বিদ্যমান, যার নাম ‘ব্যালট পেপার খেতে চাই’। বেশ মজার মজার পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার ‘দেওয়াল’জুড়ে।
একজন যেমন লিখেছেন, ‘পরীক্ষার হলে গার্ডের ভয়ে টুকলি গিলে ফেলার অভ্যাস না থাকলে কেউ ব্যালট খেতে পারে না। মানে এই অপশনটা সিম্পলি মাথাতেই আসবে না।’ আরেকটি পোস্টে লেখা, ‘স্পেশাল ব্যালট ব্রেকফাস্ট টিপস: যারা ব্যালট খেতে ভালোবাসেন, তারা শুকনো ব্যালট না খেয়ে ওর উপর দু চামচ খাঁটি মধু ছড়িয়ে নিন। তাতে ব্যালট হয়ে উঠবে সুস্বাদু ও মিষ্টি। সেইসাথে প্রতিশোধও হবে মধুর। এই সামান্য উপকারের জন্য আর ধন্যবাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।?’
আবার একজন লিখছেন, ‘কতটা খিদে পেলে একজন মানুষ বাধ্য হয়ে ব্যালট খেতে পারে?’ আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘ভাই ছোটবেলাতে চক খেতি…বড় হয়ে এখন ব্যালট পেপার খেতে পারবি?’ এই মুহূর্তে ব্যালট কতটা ‘ইমিউনিটি পাওয়ার বর্ধক’, কতটা ‘নিউট্রিশন ভ্যালু’ যোগ করে, ‘প্রোটিন’ আদৌ আছে কি না, থাকলে তার পরিমাণ কতটা, জোর আলোচনা চলছে।
মনে আছে কোভিডের সময় ‘ডালগোনা কফি’ সোশ্যাল মিডিয়ায় কেমন হইচই ফেলেছিল? মাঝে কাচকলা-করলা-বাধাকপি কাঁচা মাখা খেতে সে কী ভিড় এক একটা দোকানে। বাজারে এল গন্ধরাজ মোমো। তা নিয়েও নেটিজেনরা সে কী উচ্ছ্বাস। গপাগপ খাচ্ছে আর ফেসবুকে পোস্ট চলছে। সেই তালিকায় এবার বুঝি ব্যালট যোগ হল। তবে এখনও খেয়ে ছবি পোস্টের চ্যালেঞ্জটা কাউকে নিতে দেখা যায়নি। বলে রাখি, এই ব্যালট আদৌ হজমযোগ্য কি না সন্দেহ আছে। যিনি ব্যালট খেয়েছিলেন বলে অভিযোগ, তাঁর কিন্তু ব্যালট হজম হয়নি। কারণ, সেখানে ফের নির্বাচন হতে চলেছে।