বেলঘরিয়া : টাকার পাহাড় বলে দিচ্ছে অনেক কিছুই। গ্রেফতারও হয়েছেন মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলে চোখ রাখলেই মোটামুটি বোঝা যাবে তাঁর বিলাসবহুল জীবন যাপনের ছবিটা। একই আবাসনে তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। ঝাঁ চকচকে ফ্ল্যাট, আধুনিক পোশাক বলে দিচ্ছে, তেমন কোনও অভাব নেই। কিছু সিরিয়াল আর প্রয়োজনা সংস্থার কাজ করে এত বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনা যায় কি না, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না। বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার ছবিটা একেবারে অন্যরকম। যে ঘরে, যে বিছানায় বসে রয়েছেন অর্পিতার মা, তাতে আর যাই হোক বিলাসের ছোঁয়া নেই। মেয়ের খবর সংবাদমাধ্যমেই শুনেছেন। দেখেছেন মেয়ের ঘরে রাখা টাকার স্তূপ। মেয়ের সম্পর্কে কতটুকু জানতেন তিনি ?
ইডি অর্পিতার নাম প্রকাশ্যে আনার পরই সংবাদমাধ্যম পৌঁছে গিয়েছে বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ায় অর্পিতার বাড়িতে। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অর্পিতার মা জানালেন, হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটেই থাকতেন তাঁর মেয়ে। সপ্তাহে ২-১ দিনের জন্য যেতেন বাড়িতে, মায়ের সঙ্গে দেখা করতে। তবে বেশিদিন থাকতেন না। বাড়িতে একাই থাকেন তাঁর মা।
বাড়ির বাইরে থেকেই অর্পিতা বিভিন্ন কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন তাঁর মা। তিনি জানান, অর্পিত সিরিয়ালে, সিনেমায়, প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করতেন। আর পার্থ-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা? সে ব্যাপারে বেশি কিছু জানতেন না অর্পিতার মা। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টা দেখেছেন বলে জানালেন।
তবে মেয়ের জীবন নিয়ে আক্ষেপ ধরা পড়ল মায়ের গলায়। বিয়ে, চাকরি কোনওটাই করেননি অর্পিতা। মায়ের কথা যে শুনতেন না, সেটাও উল্লেখ করলেন বৃদ্ধা। তিনি বলেন, কথা যদি শুনত তাহলে তো বিয়েই দিয়ে দিতাম। বিয়ের কথা মাঝেমধ্যে মেয়েকে বললে অর্পিতা বলতেন, তুমি দেখো না। এ ছাড়া চাকরি নিয়েও আক্ষেপ করেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি করতেন অর্পিতার বাবা। বাবা মারা যাওয়ার পর ইচ্ছা করলে সেই চাকরি করতে পারতেন অর্পিতা। কিন্তু, তিনি কথা শোনেনি। তাঁর মা বলেন, চাকরিটা তো করল না।
অর্পিতার ঘরের টাকার স্তূপের ছবি দেখেছেন প্রতিবেশীরাও। যাঁরা ছোট থেকে অর্পিতাকে দেখেছেন, তাঁরা ওই ছবি দেখে রীতিমতো অবাক। কী ভাবে এত সম্পত্তির মালকিন হলেন পাশের বাড়ির মেয়েটি, সেটা বিশ্বাসই করতে পারছেন না তাঁরা।