প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: মদন মিত্র এমনিই রঙিন মানুষ। রসিকও বটে! তাঁর পাল্লায় পড়লে যে কোনও মুখেই চওড়া হাসির ঝিলিক দেখা যায়। অন্যদিকে দিলীপ ঘোষ রাজনৈতিক মঞ্চে শক্ত কথা শোনালেও, ব্যক্তিগত পরিসরে নাকি বেশ রসিক। অন্তত তাঁকে যাঁরা চেনেন, তেমনটাই বলেন। সেই মদন মিত্র-দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার হঠাৎই মুখোমুখি হলেন বিধানসভার লবিতে! তারপর বাকিটা… তাড়িয়ে আলোচনার রসদ।
দিলীপ ঘোষ অবশ্য এখন আর বিধায়ক নন। তবে দলের ৭৭ জন বিধায়ককে কোনও ভাবেই শুভেন্দুর ‘একা হাতে’ ছেড়ে দিতে চান না। হয়তো সে কারণেই এদিন হঠাৎই বিধানসভায় হাজির হলেন তিনি। যদিও দলীয় বিধায়করা জানিয়েছেন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে বিধানসভা ভবনে যান দিলীপ। অন্যদিকে মদন মিত্র কামারহাটির বিধায়ক। বহু দিন পর অধিবেশনে যোগ দিতে আসেন।
মদনের পরণে সুন্দর কাজ করা কালো পাঞ্জাবি, প্যান্ট। বাঁ হাতে সোনালি ডায়ালের ঘড়ি। এমনিতেই মদন মিত্র সবসময় ধোপধুরস্ত। পোশাকে, হাবভাবে, চলাফেরায় ‘কায়দা’ই আলাদা। আর ইউএসপি নিঃসন্দেহে, এক গাল হাসি। এদিন দিলীপ ঘোষের মুখোমুখি হতেই সেই হাসি দেন মদন।
দিলীপও দাঁড়িয়ে চোখের ইশারায় মদন মিত্রের পাঞ্জাবির দিকে তাকিয়ে বলেন,”কী গুরু ক’পিস আছে?” মদন পাল্টা বলেন, “এক পিসই।” সেই শুনে হো হো করে হেসে ওঠেন দিলীপ ঘোষ। আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিজেপি বিধায়করা দলের রাজ্য সভাপতির এমন রসিক রূপে গদগদ। এরই মধ্যে দিলীপ ঘোষ মদনের দিকে খানিকটা মাথা ঝুঁকিয়ে আলতো করে ছুঁড়ে দেন, “হ্যাঁ, তৃণমূলে তো এক পিসই হিরো আছে।” এরপর হাসির রোল ওঠে লবিতে। একে অপরকে ‘ভাল থাকবেন’ বলে যে যার পথ নেন।
এদিন সকালে সাদা আর গোলাপি শেডের ‘ড্যুয়াল টি শার্ট’ ও কালো জিন্সে বিধানসভায় গিয়েছিলেন মদন মিত্র। মধ্যাহ্ন বিরতির পর যখন বিধানসভা ভবনে ঢোকেন তখন পরণে আবার কালো পাঞ্জাবি আর প্যান্ট। দফায় দফায় পোশাক বদলানোটা নেহাতই ‘কেত’? জবাব দিলেন মদন নিজেই, “না না দূর! জামাটা ভিজে গিয়েছিল, তাই বদলে এলাম।” তবে বর্তমান রাজনীতির কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে এ ধরনের সৌজন্য-পর্ব নিঃসন্দেহে আলোচনার রসদ জোগায়। সে আলোচনা নির্ভেজাল মজার।