কলকাতা: সোনালি পার্কের খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হল নিহতের ভাইয়ের স্ত্রীকেও। ধৃতের নাম স্ত্রী ললিতা সাউ। খুনের ঘটনায় তিনিও জড়িত রয়েছেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। গত মঙ্গলবার সোনালি পার্ক এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয় মুকেশ সাউয়ের রক্তাক্ত দেহ। সেদিন তদন্তকারীরা পরীক্ষা করে দেখেছিলেন, ঘরের মধ্যেই পড়েছিল ভাঙা চুরির টুকরো। তাতে তদন্তকারীরা মনে করেছিলেন, এই খুনের ঘটনায় কোনও মহিলাও জড়িত থাকতে পারেন। প্রথমে এই ঘটনায় নিহতের ভাইকে আটক করা হয়। তিনিই প্রথম দেহ দেখেছিলেন। পরে উঠে আসে অন্য তথ্য।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই খুন হতে হয়েছে সোনালি পার্কের বাসিন্দা মুকেশ সাউকে। সপ্তাহ পেরনোর আগেই বাঁশদ্রোণী খুনে রহস্যভেদ করল পুলিশ। ঘটনার গ্রেফতার করা হয়েছে মূল অভিযুক্তকে। ধৃতের নাম রাজীব কুমার।
রবিবার রাজীবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, খুন করে বিহারে পালিয়ে গিয়েছিল রাজীব। কিন্তু কেন খুন করেছিল সে? জেরায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রাজীবের সঙ্গে মুকেশের ভাইয়ের স্ত্রীয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। মুকেশ সে কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন। তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান তিনি। দু’জনের সম্পর্কে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান মুকেশ। তার থেকেই ক্ষোভ বাড়ে। নিজেদের সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য মুকেশকে খুনের পরিকল্পনা করে রাজীব। তারপর ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। সেই চাকু ধরিয়ে দেওয়া হয় মুকেশেরই হাতে।
তবে এই খুনের নেপথ্যে আর অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। অন্য কোনও ‘ক্লু’-এর খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।
গত মঙ্গলবার সোনালি পার্ক এলাকায় মুকেশ সাউ নামে বছর তেতাল্লিশের ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ির সামনেই মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল দেহটি। মুকেশ দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। মঙ্গলবার তাঁর দেহ প্রথম দেখতে পান ভাই। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।
ভাই সঞ্জয়ের গলায় নখের আঁচড় মেলে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মুকেশ ফলস সিলিংয়ের কাজের বরাত ধরত। ভাই সঞ্জয় ছিল লেবার। সম্প্রতি ভাই সঞ্জয়কে কাজে নিচ্ছিল না মুকেশ। ফলে আয় কমেছিল সঞ্জয়ের। তা নিয়ে মুকেশের উপর রাগ ছিল সঞ্জয়ের।
মঙ্গলবারই ঘরের একাধিক জায়গা থেকে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ফুট প্রিন্ট নেওয়া হয়েছে। ঘরে মিলেছে ভাঙা ছুরি। সেখান থেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত মুকেশের হাতে গুঁজে দেওয়া হয়েছে চপার। সেটা থেকেও ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়। দাদার সঙ্গে ঘড়ি কেনা নিয়ে বচসা হয়েছিল বলে জেরায় স্বীকার করেছিল সঞ্জয়। তবে যে এই খুনের সঙ্গে সে কোনওভাবেই জড়িত নয়, তা বারবার বলেছিল। আপাতত এই খুনের নেপথ্যে পরকীয়া তত্ত্বই উঠে আসছে।
আরও পড়ুন: Bansdroni Murder Case: ভাইয়ের বউয়ের প্রেমিকই ‘কালপ্রিট’! বাঁশদ্রোণীর যুবক খুনে রহস্যভেদ পুলিশের