
কলকাতা: আশঙ্কা ছিলই। নেপালে গিয়ে কোনও বাঙালি পর্যটক বিপদে পড়েছেন কিনা। সামনে এল সেই তথ্য। ছেলে ও পুত্রবধূ ঘুরতে গিয়ে আটকে নেপালে, যোগাযোগও সঠিকভাবে হচ্ছে না। চিন্তায় নিদ্রাহীন দিন কাটছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের আধিকারিক অমল মজুমদার এবং তাঁর স্ত্রীর। হুগলির শেওড়াফুলির বাসিন্দা অমল মজুমদারের ছেলে কুশল মজুমদার পুত্রবধূ ত্রিপর্ণাকে নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর নেপালে ঘুরতে যান। রোকসৌল হয়ে তাঁরা নেপালে প্রবেশ করেন।
রেলের আধিকারিক অমল জানাচ্ছেন, একটি ট্রাভেলস সংস্থার সঙ্গে তাঁদের ছেলে এবং পুত্রবধূ নেপাল ঘুরতে গিয়েছেন। প্রথম এক-দেড় দিন পোখরা এবং অন্যান্য জায়গা ঘোরার ব্যাপারে কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু তারপর থেকেই ছেলে এবং পুত্রবধূকে হোটেলের ভেতর আটকে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে হোটেলের বাইরে ওই দম্পতিকে বের হতে নিষেধ করেছেন ট্রাভেলস সংস্থার আধিকারিকরা।
অমলবাবু জানালেন, ছেলের সঙ্গে দিনভর কথা হচ্ছে না। শুধুমাত্র রাতের দিকে নেটওয়ার্ক ঠিক থাকলে, তবেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কথা হচ্ছে। তাঁর কথায়, “চিন্তায় আমার এবং আমার স্ত্রী খাওয়া – দাওয়া করতে পারছি না। খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। উদ্বেগে দিন কাটছে আমাদের। ভারতে দূতাবাসের তরফে আমার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। একটা নম্বর দেওয়া হয়েছে, জরুরিকালীন সময় যোগাযোগ করার জন্য। কিন্তু আমার ছেলে এবং পুত্রবধূ কোনরকম বিশৃঙ্খলা ছাড়াই ঘরে ফিরে আসুক সেটাই এখন চাইছি।”
১৭ সেপ্টেম্বর ফেরার কথা ছিল কুশল ও ত্রিপর্ণার। অমল বললেন, “ছেলে সকালে জানিয়েছে, কার্ফু জারি হয়েছে নেপালে। তাই কবে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে এবং কবে আমার ছেলে এবং পুত্রবধূ ফিরবে সেটা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। আমার ছেলে ভ্রমণপিপাসু। কিন্তু কোনদিন এই ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি। আমি জানি না কি হবে। পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে। ভয় লাগছে এবং উদ্বেগে আছি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদে জ্বলছে নেপাল। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডু ছাড়াও নেপালের বিভিন্ন অংশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে। এই সংঘর্ষের আবহে নেপালে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের ওপর বিশেষ নজর রেখেছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। নেপাল-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তে বিশেষ নজরদারি চলছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন খোদ ডিজি রাজীব কুমার। নজর রয়েছে পানিট্যাঙ্কি এলাকাতেও।