কলকাতা: ভবানীপুরের ব্যবসায়ী খুন কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়। এলগিন রোডের গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার ব্যবসায়ীর নগ্ন দেহ। ঘর থেকে মিলেছে লুব্রিক্যান্টও। তবে কি অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক ছিল ব্যবসায়ীর? সূত্রের খবর, অভিযুক্ত ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। সকাল ১০টা নাগাদ গেস্ট হাউসে চেক ইন করে অভিযুক্ত। পরে ব্যবসায়ীকে নিয়ে সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ গেস্ট হাউসে যায় যুবক। প্রায় ৪০ মিনিট পরে গেস্ট হাউস থেকে চেক আউট না করেই বেরিয়ে যায় যুবক। তারপর ব্যবসায়ীর মোবাইল থেকে তার বাড়িতে ফোন করে ২৫ লক্ষ টাকা চায়। তবে কি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই খুন? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
সোমবার থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন ভবানীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী শান্তিলাল বৈদ। পরিবারের দাবি, সন্ধ্যায় তাদের কাছে একটি ফোন আসে। অপহরণের পর ২৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে, দাবি ব্যবসায়ীর পরিবারের। এদিকে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, অভিযুক্তের সঙ্গে নিজে গেস্ট হাউসে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ী। তাঁকে জোর করে গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া কোনও প্রমাণ মেলেনি। কেন স্বেচ্ছায় ওই যুবকের সঙ্গে এলগিন রোডের গেস্ট হাউসে গেলেন শান্তিলাল বৈদ? তবে কি সেই যুবক ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচিত? এমনকি ব্যবসায়ীর কল লগ থেকেও মিলেছে সেই যুবকের ফোন নম্বার।
তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। মঙ্গলবার সকালে এলগিন রোডের ওই গেস্ট হাউজ়ে ঢুকে দেখা গিয়েছে অন্য ছবি। বিছানার চাদর টান টান করে পাতা ছিল। কম্বল খোলা ছিল। পাশের টেবিলে ছিল খাওয়ার প্লেট। আধ খাওয়া খাবার ছিল তাতে। মিলেছে সিগারেট প্যাকেটও। তাই যুবক যে ব্যবসায়ীর পরিচিত, সেটা একপ্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। পুলিশ মনে করছে, দুটি কারণ থাকতে পারে। ব্যবসায়ীক কোনও শত্রুতা থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, কোনও ব্যক্তিগত কোনও সম্পর্কের টানাপোড়েনও থাকতে পারে।
আপাতত ব্যবসায়ী খুনে এখন জটাজাল। কোথায় লুকিয়ে রহস্য? তদন্তে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখা। গেস্ট হাউজ়ের চতুর্দিকে এখন কড়া নিরাপত্তা। প্রাক্তন ডেপুটি পুলিশ কমিশনার সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত প্রাক মুহূর্তে এ সব কিছুই বলা যাবে না। কজ় অফ ডেথটা আগে জানতে হবে। এটা ম্যাজিস্ট্রিয়াল পর্যায়ের একটা ইনভেস্টিগেশন। তারপর ভিডিয়ো ফটোগ্রাফি হবে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে যে কীভাবে ওঁকে মারা হল। ওঁর মোবাইলের কললিস্টটাও খতিয়ে দেখতে হবে। কাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা কোথাকার বাসিন্দা, তারা আদতে কারা, পূর্ব পরিচিত কিনা. পুঙ্খানুপুঙ্খ কী খবর ছিল, সেগুলির সব ফোনের মাধ্যেই তথ্য পাওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে একাধিক মোবাইল থাকলে, সেগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।”