কলকাতা: দীর্ঘ চার বছরের অপেক্ষার পর চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা সরকার। রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিল হওয়ার পর সেই জায়গায় চাকরি পান তিনি। তবে তা বেশিদিন স্থায়ী হল না। ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর কমের অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন আর এক চাকরি প্রার্থী অনামিকা রায়। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয় ববিতার। তাঁর জায়গায় চাকরি পেলেন অনামিকা রায়।
এ দিন, চাকরি চলে যাওয়ায় আদালতেই কান্নায় ভেঙে পড়েতে দেখা যায় ববিতাকে। বলেন, “দীর্ঘদিন আমায় বিভিন্ন চাপের সম্মুখীন হতে হয়েছে। সব কিছুর উর্ধে উঠে আমি মহামান্য আদালতের রায়কে গ্রহণ করে চাকরি জোগাড় করেছি। আমি আমার বাড়ি পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাকরি চাইনি। যেখানে চাকরি দেওযা হয়েছে সেখানেই করেছি। এরপরও চাকরিটা চলে গেল আমার। এতে আমার ভুল না কমিশনের ভুল জানি না।” এরপর প্রশ্ন করে বলেন, “এতবার ভেরিফিকেশন করা হয়েছে তখনই আমায় কেন বলা হল না? আজ এক বছর চাকরি করার পর তা কেড়ে নেওয়া মোটেই কাম্য নয়।”
প্রসঙ্গত, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে যে তথ্য আদালতে জমা দেওয়া হয়েছিল এবং বাকি সব তথ্য খতিয়ে দেখে ববিতা সরকারের চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। ববিতার অ্যাকাডেমিক স্কোর কম ছিল। ফলে সব দিক বিবেচনা করে ববিতার চাকরি বাতিল করার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মামলাকারী অনামিকা রায়কে চাকরি দেওয়ার জন্য। আদালতের মন্তব্য, অনামিকাকে আর বেশিদিন ভোগানো উচিত নয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে অনামিকাকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে স্কুল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে, ববিতার কাছে জমা থাকা ১৫ লাখ টাকা রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ১৯ মে জমা দিতে হবে। তবে ববিতার আর্জি ছিল, এসএসসি একবারও তাঁকে জানায়নি এটি ভুল ছিল। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁর কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান ববিতা। আদালতে ববিতা জানান, ১১ লাখ টাকা তিনি আজই জমা দিতে পারবেন। কিন্তু বাকি টাকার জন্য আদালতের কাছে তিন মাস সময় চান তিনি। সেক্ষেত্রে আদালত বাকি টাকা ৫ জুনের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত আরও জানিয়েছে ববিতা চাকরি পাওয়ার যে অর্জিত কয়েক মাসের বেতন ফেরত দিতে হবে না অনামিকাকে।