
কলকাতা: বিকাশভবনের সামনে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন চাকরিহারা। একটাই দাবি, তাঁদের ন্যায্য চাকরি, তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই গত বৃহস্পতিবার তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ, চাকরিহারাদের মধ্যে অনেকেই শারীরিকভাবে বিধ্বস্ত, আবার পাঁচ চাকরিহারা শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশই! এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবারই তাঁদের সঙ্গে রাতে দেখা করতে যান রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু এই আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি তাঁরা চান না। চাকরিহারা চান, যদি তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই হয়, তাহলে সেটা সংসদে আওয়াজ তুলে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে শিক্ষক হিসাবে ‘হোমটাস্ক’ দিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।
রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে চাকরিহারা শিক্ষকের তরফে মেহবুব মণ্ডল বলেন, “রাজ্য সরকার, তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিআইএম সকলেই আমাদের পাশে থাকার কথা বলেছেন। সকলেই বলেছেন তাঁরা আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কিন্তু এটা কোন জায়গা থেকে হয়? ভালবাসা অ্যাক্টিভিটিসে নয়, স্লোগান, প্রতিশ্রুতিতে নয়। আমরা প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে ‘ হোমটাস্ক ‘ দিচ্ছি। সেই টাস্ক তাঁরা পূরণ করলে আমরা ‘আউটস্ট্যান্ডিং’ দেব।”
কী সেই টাস্ক? মেহবুব জানালেন
“বিজেপির টাস্ক: এক, বিজেপির প্রচুর এমএলএ, এমপি আছে। রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পুর্নর্বিবেচনা চেয়ে আর্জি জানান আমাদের হয়ে। যদি করেন, এটাই আমাদের কাছে মূল্যবান। দ্বিতীয়ত, পার্লামেন্টে অধিবেশনে আমাদের উপর অন্যায় নিয়ে কথা বলুন। যদি করে আমরা স্যালুট জানাব। আউটস্ট্যান্ডিং দেব।”
মেহবুবের কথায়, “তৃণমূলকেও কমন হোমটাস্ক। আপনাদের বিধায়ক, সাংসদরা ন্যায় বিচারের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দিন। একই বয়ানে। পার্লামেন্টে একই সুরে আমাদের অন্যায় নিয়ে আলোচনা করুন।” তবে সিপিএমের যেহেতু বিধায়ক নেই, তাই তাদের জন্য আলাদা টাস্ক।
মেহবুব বলেন, “ সিপিএম-কে টাস্ক — আপনাদের বিধায়ক নেই। তবুও আপনারা বাইরে আওয়াজ তুলুন। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সুপ্রিম কোর্টে প্যানেল বাতিলের দাবি তুলেছেন। আমাদের হোম টাস্ক সিপিআইএম-কে এটা দেওয়া থাকল, অন্তত রিভিউ পিটিশনের সময়ে যেন বলে প্যানেলটার সেগ্রিগেশন চাই অথবা রিপ্যানেল চাই। শুনানির সময় বলুন যে আমরা প্যানেল বাতিল চাই না।”
সর্বোপরি রাজ্য সরকারকে চাকরিহারারা শিক্ষকদের একটাই টাস্ক, “আমাদের চাকরি বাঁচানোর দায় নিতে হবে। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে।”
মেহবুব জানালেন, বায়ো টয়লেট দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাসের তুলনায় এইভাবে যদি রাজনৈতিক দলগুলি পাশে থাকে, তাহলে তাঁরা সত্যিই উপকৃত হবে। মেহবুব বলেন, “আমরা চাই যাতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে আউটস্ট্যান্ডিং দিতে পারি, তার থেকেই যদি কিছু বেশি থাকে, প্লাস… প্লাস… প্লাস… দিতে চাই।”