কলকাতা : সোমবার বিধানসভার অভ্যন্তরে অধিবেশন চলাকালীন হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিধায়করা। তৃণমূল ও বিজেপি উভয় শিবিরেরই বেশ কয়েকজন বিধায়ক জখম হয়েছেন। ঘটনার জেরে শুভেন্দু অধিকারী সহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে আগামী বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হয়েছে। সোমবারের এই ঘটনায় বিজেপির অনেকেই অভিযোগ তুলছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলছে বিজেপি শিবির। সেই প্রসঙ্গে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আজকের ঘটনা অভূতপূর্ব এবং নিন্দনীয়। স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে কখনোই কেউ সন্তুষ্ট হয় না । ওদের বলে লাভ কী আছে! ওদের তো বিধানসভায় বলার সুযোগ দিই। আজ শুভেন্দু উত্থাপন করতে চেয়েছে, উত্থাপন করতে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম, নিয়ম মোতাবেক আপনি দরখাস্ত করুন। আইন পড়বে না, আইন জানতে না…”
ঘটনার পর অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন,”এটি সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত একটি ঘটনা। বিধানসভার ভিতরে এই ধরমের ঘটনা কোনওভাবেই বাঞ্ছনীয় নয়। বিধানসভার অভ্যন্তরের বিরোধীরা আসবেন, সরকার পক্ষের সদস্যরা আসবেন। উত্তেজনা হতে পারে, উত্তাপ হতে পারে আলোচনার ক্ষেত্রে। কিন্তু যেভাবে আজ তাঁরা মারমুখী হয়ে এসেছিলেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। খুব খারাপ লেগেছে আমার।”
এদিকে রাজ্য বিধানসভার এই আঁচ গিয়ে পড়েছে সংসদেও। বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সংসদে বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আজ শুভেন্দু অধিকারী, মনোজ টিগ্গাদের উপর আক্রমণ হয়েছে বিধানসভার ভিতরে। সারা ভারতে এর নজির নেই। বাংলায় ৩৫৫ ধারা চাই। কারণ পশ্চিমবঙ্গে কোনও শাসন নেই, কোনও সরকার নেই। বিধানসভার অধ্যক্ষ বলছেন, একে মারো, ওকে মারো। পশ্চিমবঙ্গে কোনও গণতন্ত্র নেই।
ঘটনার প্রতিবাদে সংসদের বাইরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরব বিজেপি সাংসদরা। বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের উপর যে হামলা হয়েছে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। এমন ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছিলেন বিধানসভায়। তিনি নিজে ভাঙচুর করেছিলেন। এখন তিনি (তাঁর দল) আমাদের বিজেপি বিধায়কদের উপর হাত ওঠাচ্ছেন।”
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষকে। বলেছেন, “তাঁর কাছ থেকে এই ধরনের আচারণ শোভা পায় না। তিনি যে পদমর্যাদায় বসে আছেন, সেই পদের গরিমা সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারনা নেই। বিধানসভার ভিতরের যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডাবাহিনী, কীভাবে হিংসাত্মক কাজ চালিয়েছে।”