SSKM: জখম ছেলেকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতালে পরিবার, দেড়দিন পরও মেলেনি চিকিৎসা

TV9 Bangla Digital | Edited By: Sukla Bhattacharjee

Mar 19, 2023 | 8:31 PM

দেড়দিন ধরে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও কোথাও বেড মেলেনি।

SSKM: জখম ছেলেকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতালে পরিবার, দেড়দিন পরও মেলেনি চিকিৎসা
কলকাতার একের পর এক হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা মেলেনি বীরভূমের মনিরুদ্দিনের।

Follow Us

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও রেফার-রোগ কাটেনি! সৌদিতে (Saudi Arabia) দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত এক যুবককে কলকাতায় (Kolkata) নিয়ে এসে একের পর এক হাসপাতালে ছুটে বেড়াচ্ছে পরিবার। কিন্তু, ৩৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনও হাসপাতালে ঠাঁই মেলেনি প্রায় নিস্তেজ হয়ে পড়া বীরভূমের (Birbhum) ওই যুবকের। এমনকি যুবকটিকে নলে করে খাওয়ানোর বন্দোবস্ত করার জন্য কোনও নার্সেরও সাহায্য পাননি। ফলে চরম অসহায় অবস্থায় অসুস্থ ছেলেকে স্ট্রেচারে করে নিয়ে রাতভোর হাসপাতালের এমার্জেন্সির সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই যুবকের অসহায় পরিবার।

জানা গিয়েছে, অসুস্থ ওই যুবকের নাম মনিরুদ্দিন। বীরভূম জেলার নানুরের বাসিন্দা মনিরুদ্দিনকে নিয়ে শনিবার দুপুর থেকে কলকাতার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাঁর পরিবার। মনিরুদ্দিনের বাবা শেখ নিজামুদ্দিন বলেন, সৌদি থেকে দূতাবাসের সাহায্যে শনিবারই কলকাতায় নিয়ে আসা হয় ছেলেকে। বিমানবন্দর (Kolkata Airport) থেকে প্রথমে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (Medical College Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে নিউরো চিকিৎসক নেই বলে বাঙ্গুর হাসপাতালে (Bangur Hospital) রেফার করে দেওয়া হয়। নিউরোর জন্য স্পেশ্যালিস্ট বাঙ্গুর হাসপাতাল। কিন্তু, সেখানকার চিকিৎসক জানায় অস্ত্রোপচার করতে হবে। সেজন্য SSKM হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। কিন্তু, এখানে এমার্জেন্সি থেকে জানানো হয়, বেড নেই। এখান থেকে আবার NRS কিংবা CNMC-তে স্থানান্তরিত করা হয়। ৩০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এখনও ছেলে কোনও চিকিৎসা পায়নি।

ঠিক কী হয়েছে মনিরুদ্দিনের?
নিজামুদ্দিন শেখ জানান, বছর খানেক আগে সৌদিতে কাজে গিয়েছিলেন মনিরুদ্দিন। সেখানে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তারপর কোম্পানি চিকিৎসার কোনও দায়িত্ব নেয়নি। অবশেষে সৌদিতে ভারতীয় দূতাবাসের চেষ্টায় ছেলেকে একবছর পর, গতকাল দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন নিজামুদ্দিন। মনিরুদ্দিনের দুটি হাতের কব্জি বেঁকে গিয়েছে। চোখ যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসছে। নলের মাধ্যমে খাবার খান। কথা বলার ক্ষমতাও নেই। একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়ে রয়েছেন মনিরুদ্দিন। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মনিরুদ্দিনের স্নায়ুজনিত সমস্যা হয়েছে। অবিলম্বে বিশেষ চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কিন্তু, অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজনের কথা ডাক্তারেরা স্বীকার করে নিলেও কোনও হাসপাতালে ঠাঁই মেলেনি।

নিজামুদ্দিন শেখ জানান, ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়ার জন্য বিধায়ক বিধান চন্দ্র মাঝি এবং সাংসদ শান্তনু সেনের চিঠিও তাঁর কাছে রয়েছে। কিন্তু, সেগুলি এখানে কাজে লাগবে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে। শনিবার তিনি কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসেও গিয়েছিলেন ছেলের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করে দিতে। তাঁরা আশ্বাসও দিয়েছিলেন বলে জানান নিজামুদ্দিন। কিন্তু, ৩৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ছেলেকে কোনও হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারেননি নিজামুদ্দিন। ফলে দিশাহারা মনিরুদ্দিনের পরিবার। আর এভাবে গুরুতর অসুস্থ রোগীকে একের পর এক হাসপাতালে রেফার করার ঘটনা ফের সরকারি হাসপাতালগুলির ‘রেফার-রোগ’-এর কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।

Next Article