
কলকাতা: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর যাত্রী যাতায়াত করেন। কলকাতা তো বটেই, তার আশপাশের একাধিক জেলার বিভিন্ন পেশার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এটি। চাকরিজীবী থেকে স্কুল পড়ুয়া কিংবা সবজি বিক্রেতাদের প্রাণকেন্দ্র এই স্টেশন। ফের একবার সেই স্টেশনেরই নাম বদল করার দাবি উঠল। রবিবার শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট এসি (AC) লোকালের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও। আর সেখান থেকেই বড় প্রস্তাব দিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। শিয়ালদহ স্টেশনের নাম বদলের আর্জি জানালেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, যার জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই শ্যামাপ্রসাদের নামেই হওয়া উচিত শিয়ালদহ স্টেশনের নাম।
এর আগে অর্থাৎ গতবছরের অক্টোবরে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কলকাতায় এলে এই স্টেশনের নাম পরিবর্তনের দাবি করেন রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ তথা বর্তমান বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, “মানুষের রক্তাক্ত ইতিহাস জড়িয়ে আছে। সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষ একদিন এসে ভিড় করেছিলেন শিয়ালদহ স্টেশনে। সেদিন ক্যাম্প করে শিয়ালদহের আশপাশে তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল যাঁর তত্ত্বাবধানে,তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তাই রেলের একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমাদের দাবি জানিয়েছি।” উত্তরে রেলমন্ত্রী বিষয়টি ‘দেখার’ আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এরপর আজ অর্থাৎ রবিবার একই বিষয় ফের উত্থাপন করেন সুকান্ত। এ দিন তিনি বলেন, “এই প্রস্তাব রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এলে রেল করতে পারে। রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছিল এই প্রস্তাব তাদের তরফ থেকে আসুক। কারণ, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে উইশ করেন। তার জন্য এই টুকু করতেই পারেন।” যদিও, তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে শিয়ালদহ স্টেশনের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। নাম দিতে হবে, বিজেপির পছন্দ মতো নাম দিতে হবে বলে সব জায়গায় শ্যামাপ্রসাদের নাম দিতে হবে তা তো যুক্তি সংগত হতে পারে না। যেই মনিষীর সঙ্গে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত রয়েছে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ। তাই প্রকৃত অর্থে কোনও মনীষীর নাম যদি দিতে হয় তাহলে স্বামী বিবেকানন্দের নাম রাখতে পারে। কোনও টাতেই কোনও আপত্তি নেই।”
বস্তুত, ২০২০ সালে কলকাতা বন্দর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে চিহ্নিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতায় গিয়ে ঘোষণা করেছিলেন। এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাও তাতে সিলমোহর দিয়েছিল। সেই সময় মোদী সরকার জানিয়েছিলেন, মানুষের আবেগের কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছিল সিদ্ধান্ত। কলকাতা বন্দরের পর এবার শিয়ালদহ স্টেশনেরও নাম বদলের আর্জি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর।