দুই দলত্যাগী বিধায়ককে চিঠি ধরালেন শুভেন্দু, সাত দিনের মধ্যে জবাব না দিলে পরবর্তী পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি

BJP MLA: তৃণমূলে ফিরে তন্ময় ঘোষ ও বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্যের সুর মূলত একটাই ছিল, 'বিজেপিতে কাজ করা যাচ্ছে না।'

দুই দলত্যাগী বিধায়ককে চিঠি ধরালেন শুভেন্দু, সাত দিনের মধ্যে জবাব না দিলে পরবর্তী পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2021 | 9:07 PM

কলকাতা: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পরই দুই বিধায়ককে চিঠি পাঠালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে খবর দেখানো হচ্ছে’, তার ‘সত্যতা’ জানতে চেয়ে জবাব তলব করা হল বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসের কাছে। এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে দুই দলত্যাগীকে।

শুধু যাওয়া আসা। শুধু স্রোতে ভাসা। গত কয়েক বছর এটাই যেন বাংলার রাজনীতির থিম সং। এবার যে সুরে সুর মেলালেন বিশ্বজিত্‍ দাস। তৃণমূল থেকে বিজেপি। ফের তৃণমূল। মুকুল রায়ের পথই অনুসরণ করলেন বাগদার বিধায়ক। আর এর পরই দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিজেপি।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছিল বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের শেষদিন। সে দিন বিধানসভার লবিতে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেন বিশ্বজিৎ দাস। এরপর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরেও যান বিশ্বজিত্‍। প্রায় ২০ মিনিট মমতার সঙ্গে তাঁর কথা হয়। সেদিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন ‘কি রে কিছু ভাবলি?’ অবশেষে ভাবনার প্রতিফলন হল মঙ্গলবার। মাঝের এই দীর্ঘ সময় বার বার জল্পনার শিরোনামে উঠে আসেন বিশ্বজিৎ। তাঁর ‘ঘর ওয়াপসি’ নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যায়। এদিন তারই অবসান হল।

অন্যদিকে সোমবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেন। বাঁকুড়া শহরের নামজাদা এই ব্যবসায়ী এক সময় তৃণমূলেই ছিলেন। এলাকায় তাঁর পরিচিতিও ভালই ছিল। তবে দল তাঁকে ভোটের মুখ করতে চায়নি। এর পরই আচমকা একদিন তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। ভোটের আগে বিজেপিতে যোগও দেন। তৃণমূলের শুভাশিস বটব্যালকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। সূত্রের খবর, ভোটে জিতলেও নতুন দলের সঙ্গে এই তিন মাসেই দূরত্ব বাড়তে শুরু করে বিধায়কের। এরপরই সোমবার কলকাতায় এসে তৃণমূলে যোগদান করেন।

তৃণমূলে ফিরে তন্ময় ঘোষ ও বিশ্বজিৎ দাসের বক্তব্যের সুর মূলত একটাই ছিল, ‘বিজেপিতে কাজ করা যাচ্ছে না।’ সেই পরিচিত সুর, যা গলায় ধারণ করে ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িক লেগেছিল। তন্ময় ঘোষের কথায়, “বর্তমানে বাংলাজুড়ে বিজেপির একটা প্রতিহিংসার রাজনীতি চলছে। কিছুদিন আগে বিধানসভা ভোটে একটা জোরপূর্বক বাংলা দখলের চেষ্টা করল। সর্বত্র এরা কেন্দ্রীয় এজেন্সি লাগিয়ে সকলকে ভয় দেখিয়ে বাঙালির যে অধিকার তার উপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। আমাদের বাংলার ঐতিহ্যকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধেই আমার প্রতিবাদ। আমি সারা বাংলায় দলমত নির্বিশেষে সমস্ত জনপ্রতিনিধিকে বলব, সকলে আমাদের বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়ান।” অন্যদিকে এদিন বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ““ওই দলে কাজ করার কোনও পরিবেশই নেই। প্রতি নিয়ত তা শিরোনামেও উঠে আসে। দলের মধ্যেই কোনও একতা নেই।”

যদিও বিজেপির তরফে শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এরা ক্ষমতায় থাকতে চায়। লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিত আলদা। যারা দল থেকে চলে যাচ্ছেন যে কোনও মূল্যে তাদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন আমরা কার্যকর করে দেখাব।” এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সামনে আসে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাঠানো চিঠি। আরও পড়ুন: বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, ৬ মাসের জল্পনা মিটিয়ে বললেন ‘ঘরের ছেলে, ঘরে ফিরে এসেছি’