কলকাতা: বঙ্গ-বিজেপি-তে দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) সবচেয়ে বড় বিরোধী কে? এই প্রশ্নের উত্তরে অন্য নামের সঙ্গে উঠে আসবে তথাগত রায়ের (Tathagata Roy) নাম। দু’জনেই সামলেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদ। তবে বারংবার দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন তথাগত। মঙ্গলবার রাজ্যের চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে যখন বিজেপি পর্যুদস্ত, তিন কেন্দ্রে জামানত জব্দ হয়েছে, তখন ফের দিলীপ ঘোষকে নজিরবিহীন ভাষায় কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের তোপ দাগলেন বাংলায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে (Kailash Vijayvargiya)।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ঘরওয়াপসির পর সোশ্যাল মিডিয়ায় দলবদলুদের নিশানা করে ‘দালাল’ বলে পোস্ট করেছিলেন বর্তমান বিজেপির সহ সভাপতির দায়িত্বে থাকা দিলীপ ঘোষ। আর তাঁর সেই পোস্টকে নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে কুরুচিকর আক্রমণ করলেন তথাগত। তিনি লেখেন, ‘দল দালালদের জন্য কোল পেতে দিয়েছিল। গলবস্ত্র হয়ে তাদের এনেছিল। যারা আদর্শের জন্য বিজেপি করত তাদের বলা হয়েছিল, এতবছর ধরে কি করেছেন?…’ এর পর তথাগত যোগ করেন, ‘জুলিয়াস সিজারের মতো Vini Vidi Vici। এখন ভাঁড়ামো করলে হবে? আজকে বিজেপির শোচনীয় পরিণতি এই সবের জন্যই।’ (বানান অপরিবর্তিত)।
এখানেই থামেননি তথাগত রায়। উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা এই বিরোধী নেতা ফের কটাক্ষ করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে। একুশের ভোটে বিজেপি চলচ্চিত্র জগতের তিন তারকাকে প্রার্থী করার পর ‘নগরের নটী’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তথাগত। এবার কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিশানা করে ফের এ নিয়ে তীব্র ভাষায় একটি ফেসবুক পোস্ট করেন তথাগত।
এর আগে দলের দুই নেতাকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন তথাগত। এমনকি দিলীপ ঘোষের ‘কন্যাশ্রী’ লেখা পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাকে টুইটারে পোস্ট করে তথাগত লেখেন, ‘এই জন্যেই বিদ্যাসাগর মশাই বলে গিয়েছেন, মূর্খের অশেষ দোষ।’
আবার রাজ্য সভাপতির পদ থেকে দিলীপ ঘোষকে সরানোকে ‘সময়োচিত পদক্ষেপ’ বলে জানিয়েছিলেন। দলবদলুদের বিজেপি-তে ঠাঁই দেওয়া নিয়ে ‘ট্রোজার্ন হর্স’ বলে শীর্ষনেতাদের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন এই বিজেপি নেতা। আর এদিন চার উপনির্বাচনে বিজেপি দুরমুশ হওয়ার পর ফের বেনজির ভাষায় দিলীপ-কৈলাসদের নিশানা করলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা।
যদিও তাঁর এই সমালোচনামূলক পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন টুইট-ফেসবুকেও সীমাবদ্ধ বিষয় নিয়ে তিনি মন্তব্য করবেন না। উল্লেখ্য, ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদে ছিলেন তথাগত রায়। উপনির্বাচনে দলের হারের পর তাঁর এহেন দুই পোস্ট নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।