কলকাতা: বোর্ড সভাপতির (BCCI Presdient) পদ থেকে বিদায় নিতে চলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। এই নিয়ে জোর কাঁটা-ছেঁড়া চলছে বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহলে। সৌরভ রাজনীতির শিকার কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পাল্টা বক্তব্য আসছে পদ্ম শিবির থেকেও। বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির অনেক নেতাই মুখ খুলেছেন এই বিষয়ে। এদিকে বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে আরও বৃহত্তর পরিসরে, আইসিসির চেয়ারম্যান (ICC Chairman) পদের জন্য পাঠানো হতে পারে, এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। সেই ইঙ্গিতই কি দিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়? বুধবার লকেট বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “বাংলার দাদা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আমরা বাঙালি হিসেবে তাঁকে নিয়ে গর্বিত। তিনি বিসিসিআই-এর একটি জায়গায় ছিলেন। কাল হয়ত আরও হয়ত আরও বড় পদে তিনি যাবেন। ওনার জন্য অল দ্য বেস্ট বলব। এখানে কোনও রাজনীতি নেই।”
কুণাল ঘোষ এই গুঞ্জন উস্কে দেওয়ার পর থেকেই বহু বিজেপি নেতাই এই নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করে দিয়েছেন। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ এই বিষয়ে বলেন, “যাঁদের ইতিহাস ও ভূগোল সম্পর্কে সাধারণ ধারণা নেই, তারা সবকিছুতেই রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করেন। পর পর দুই বার কেউই বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ছিলেন না। সৌরভের স্থান বাঙালির কাছে অনন্য জায়গায় পৌঁছে আছে। ক্রিকেট ও রাজনীতিকে সম্পৃক্ত করে তৃণমূল যা করার চেষ্টা করছে, তা হল দৃষ্টি ঘোরানোর খেলা।”
বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও এই নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন সৌরভ ইস্যুতে। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে তো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে শাহরুখ খান বড় ক্রিকেটার। সেই তৃণমূল আজ এত কান্নাকাটি করছে কেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য? তাঁকে কি তারা প্রেসিডেন্ট করেছে? তিনি সফলভাবে খেলেছেন। ক্যাপ্টেন ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাঁর কার্যকাল পূরণ হয়েছে। তাঁর সভাপতিত্বে কমিটি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে পরের সভাপতি হবেন রজার বিনি। তাঁর কোনও কষ্ট নেই, তিনি কি কোনও অভিযোগ করেছেন? আজ তাঁর জন্য কান্নাকাটি করছে। কারণ, তৃণমূল গাড্ডায় পড়েছে, তাই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে।”
উল্লেখ্য, বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ যে তত্ত্বের কথা বলেছেন (কোনও বোর্ড সভাপতির পুনর্নিবাচিত না হওয়া), সেই একই কথা শোনা গিয়েছে বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক দেবাশিস দত্তের কথাতেও। টিভি নাইন বাংলাকে তিনি জানিয়েছেন, “আমি কখনও দেখিনি কোনও সভাপতি পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন। ফলে সৌরভকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটা আলোচনার বিষয় হতে পারে না। বোর্ডের পরবর্তী পদক্ষেপ হল আইসিসি চেয়ারম্যান করে ওকে পাঠানো। একটি রাজনৈতিক রঙের আভাস পাচ্ছি বটে। তবে সৌরভের পরবর্তী স্টেশন হল আইসিসি। যদি তা না হয়, তাহলে আমরা সত্যিকারের জোর গলায় বলব, বাঙালির প্রতি বঞ্চনা হল এবং সৌরভকে যেতে দেওয়া হল না।”