কলকাতা: ত্রিপুরার আঁচ এবার কলকাতায়। ৬ নম্বর মুরলীধর সেনের রোডের বিজেপির রাজ্য অফিসে মমতা-অভিষেকের ছবি লাগিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূলের। পাল্টা পতাকা হাতে হাজির বিজেপি কর্মীরাও। বিজেপির রাজ্য অফিসে ব্যারিকেড করে রেখেছে পুলিশ। পাল্টা বিজেপির তরফেও শুদ্ধিকরণ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, তৃণমূল কর্মীদের পা পড়ায়, তাঁদের রাজ্য দফতর অপবিত্র হয়েছে। তাই শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন। তাই জন্য রাজ্য দফতরের সামনে চলে গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধিকরণ।
বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, “ত্রিপুরার বিষয় ত্রিপুরাতে। এখানে কেন তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন? ” সূত্রের খবর, কিছুক্ষণের মধ্যেই দফতরে পৌঁছবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির সজল ঘোষের বক্তব্য, “ছোটোলোকের দলের থেকে ভদ্রতা আশা করাটাই অপরাধ। ছোটোরা ছোটো কাজই করবে। যে কাজ আজকে ওঁ করেছেন, সেখানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটবে।” তাঁর বক্তব্য, “সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে পুলিশ যে পদক্ষেপ করেছে, সেটাই উচিত। এখানে তো গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত হচ্ছে।” দফতরে এসে পৌঁছেছেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।
সোমবার সকালে তৃণমূলের একটি দল এসে পৌঁছয় বিজেপির রাজ্য দফতরে। দফতরে লাগিয়ে দেওয়া হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।
বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা বলেন, “বাংলার গণতন্ত্র রয়েছে। আজকে বিজেপির পার্টি অফিসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগিয়ে দিয়ে আমরা প্রমাণ করে দিলাম, তৃণমূল চাইলে বাংলায় বিজেপি পার্টি অফিস নাও খাকতে পারত। কিন্তু তৃণমূল সেটা করবে না। তৃণমূল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।” সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “সায়নী ঘোষের বিরুদ্ধে বিপ্লব দেবের নির্দেশে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে ওখানে সভা করতে না পারেন, তার জন্য বিমানবন্দরে মিথ্যা বোমাতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে।”
বিজেপির সদর দফতরের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। তৃণমূলের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “বিজেপির পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে নিতেই পারে। সেই সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তৃণমূল দখলদারিতে বিশ্বাসী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় বলতে গেলে তৃণমূলই ত্রিপুরায় একটি বহিরাগত দল। ওরা আগে ওখানে সংগঠন তৈরি করুক। তারপর তো আন্দোলন। ত্রিপুরায় তো কোনও স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে দেখা যায় না। দেখা যায় সায়নী ঘোষ, কুণাল ঘোষেদের। কিন্তু ওঁরা কেন ওখানে গিয়েছেন? ওখানে গুন্ডাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। এর আগে পুলিশ গিয়ে আমাদের অফিস ঘেরাও করে দিয়েছে। এখন গুন্ডাবাহিনী পাঠিয়ে করা হয়েছে। ”
বিজেপির কর্মী সমর্থকরা রাজ্য দফতর আগলে রেখেছেন। অভিযোগ, তৃণমূল যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল, তখন কোনও পুলিশ দেখা যায়নি। কিন্তু বিজেপি কর্মী সমর্থকরা প্রতিরোধ গড়তে আসেন, তখন রাস্তার দুই ধার গার্ডওয়াল দিয়ে আগলে রাখে পুলিশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতার সায়ন্তন বসুর হুঁশিয়ারি, “যদি এই ধরনের রাজনীতি বাংলায় করতে চায় তৃণমূল, তাহলে তার ফল ভয়ঙ্কর হবে।”
আরও পড়ুন: বিজেপির রাজ্য দফতরে লাগিয়ে দেওয়া হল মমতা-অভিষেকের ছবি! ত্রিপুরার আঁচ এবার বাংলায়