কলকাতা: মগরাহাটের বিজেপি নেতার মৃত্যুর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে প্রবল বিক্ষোভ বঙ্গ বিজেপি (BJP) নেতাদের। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) নেতৃত্বে ভবানীপুরের রাস্তায় মৃত বিজেপি নেতা মানস সাহার মরদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি নেতারা। রাস্তার উপর মৃত বিজেপি নেতার দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা তীব্র উত্তেজনা ছড়াল ভবানীপুরে (Bhabanipur)।
কালীঘাটে বিক্ষোভ করতে করতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে এগিয়ে যান বিজেপি নেতারা। এদিন মগরাহাট কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহার মৃতদেহ নিয়ে বিজেপি অফিস থেকে সোজা ভবানীপুরে চলে যান বালুরঘাটের সাংসদ তথা নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং, ভবানীপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল প্রমুখ।
এসপ্ল্যানেড ছাড়িয়ে ভবানীপুর হয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে মৃত বিজেপি নেতার দেহ নিয়ে উপস্থিত হন সুকান্ত মজুমদাররা। প্রবল বিক্ষোভে থমকে যায় রাস্তা। প্রবল যানজট শুরু হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। সেখানে ফের একপ্রস্থ ঝামেলা শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ঝামেলা চলার পর মৃতদেহ সরায় পুলিশ। এর পর মৃত বিজেপি নেতার দাহকার্যের জন্য ক্যাওড়াতলা রওনা দেন নেতারা।
উল্লেখ্য, একুশের ভোট গণনার দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন মগরাহাটের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহা। তারপর থেকেই শুরু হয় শারীরিক অসুস্থতা। তার পর এদিন সকালে হাসপাতালে প্রাণ হারালেন বিজেপির মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রের প্রার্থী মানস সাহা। বিজেপি নেতার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের একবার রাজ্যের বিরুদ্ধে ভোট পরবর্তী হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে সরব হন সুকান্ত মজুমদাররা।
এদিন মুখ্যমনন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি Tv9 বাংলাকে বলেন, একটা সাধারণ প্রশ্ন নিয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়েছিলেন। সুকান্তবাবুর কথায়, “সেই প্রশ্নটা ছিল আর কত লাশ দেখলে শান্ত হবেন মুখ্যমন্ত্রী? মানসদার মৃতদেহ দেখতে দেখতে মনে হল, উনি যেন হাসছেন। ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী যে আবেদন করেছিলেন ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করতে, মানসদা মারা গিয়ে যেন সে কথায় হাসছেন!”
তিনি ফের পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, মানসবাবুর মৃতদেহ হাইজ্যাক করার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। বাংলার গণতন্ত্র ভুলুণ্ঠিত বলে কটাক্ষ করেন সুকান্তবাবু। এদিকে তৃণমূলের তরফে এই বিক্ষোভ মিছিলের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। সাংসদ সৌগত রায়ের দাবি, ভোট পরবর্তী হিংসার কাহিনি জিইয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। তারা এভাবে প্রচারে থাকতে চাইছে। রাজ্যে আর কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। এমনকি মানসবাবুর মৃত্যুও যে ভোট পরবর্তী হিংসায় হয়েছে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি বলে মন্তব্য করেন তৃণণমূল সাংসদ।
এদিকে সৌগতবাবুকে কটাক্ষ করে সুকান্ত মজুমদারের মন্তব্য, একদিন তাঁর সঙ্গে গাড়ি করে তৃণমূল সাংসদ বেরলে তিনি দেখিয়ে দেবেন ভোট পরবর্তী হিংসা এখনও চলছে কিনা।