কলকাতা: বিজেপির রাজ্য সভাপতি (BJP State President) হওয়ার তৃতীয় দিনে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ালেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। বুধবার সকালে ভবানীপুরে (Bhabanipur) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ওয়ার্ডে উপনির্বাচনের প্রচারে যান বিজেপি-র নয়া রাজ্য সভাপতি। কিন্তু সেখানে তাঁকে পুলিশ আটকালে তাদের সঙ্গে বচসায় জড়ান রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্তবাবু।
বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের সমর্থনে প্রচার করতে গিয়ে কোভিড বিধি (Covid Guideline) ভাঙার অভিযোগ উঠেছে সুকান্তবাবুদের বিরুদ্ধে। তাঁদের গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি দিতেই শুরু হয় তর্কাতর্কি। ডিসি সাউথ-এর সঙ্গে বচসায় জড়াতে দেখা যায় সুকান্ত মজুমদারকে। জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনের ঠিক পিছন দিক থেকেই বিজেপির প্রচার শুরু হয়। হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ি-বাড়ি প্রথমে লিফলেট বিলি করতে দেখা যায় রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে। কিন্তু এর পর তাঁরা এগোতে গেলে ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হয়।
এদিকে পুলিশের কাছে সুকান্তবাবু জানতে চান কেন তাঁকে আটকে দেওয়া হচ্ছে। তাঁর প্রচার করার সম্পূর্ণ অধিকার আছে বলে পুলিশের কাছে দাবি করেন তিনি। পুলিশ জানায়, যাওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের কাছাকাছি ওই জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলে জানানো হয়। যদিও তা মানতে নারাজ বিজেপি নেতারা। সুকান্তবাবুরা এর পর বচসায় জড়ান পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে।
তাছাড়া যে বিজেপি কর্মীরা জড়ো হয়েছেন, তাঁদের সবার ভ্যাকসিনেশন হয়নি। তাই এত সংখ্যক মানুষকে জড়ো করা যাবে না বলে জানায় পুলিশ। তাই প্রয়োজনে গ্রেফতারির হুঁশিয়ারি দেন ডিসি সাউথ।
এদিকে এই ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। তাঁর কথায়, “আমি তো মানুষকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছি না। আমি হাঁটছি, মানুষ আমাদের পিছনে পিছনে আসছে। পুলিশ তাঁদের কেন আটকাচ্ছে না? নিজের বুথে হেরেছিলেন, সেই জন্য ভয় পাচ্ছেন।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে প্রচারে বাধা পেয়ে তৃণমূল সুপ্রিমকে কটাক্ষ পদ্মপ্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের।
এদিকে মিত্র ইনস্টিটিউশন থেকে প্রচার শুরু করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর পদযাত্রা এগোলেই পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে সুকান্তবাবুকে বলতে শোনা যায় তিনি একজন সাংসদ। তাঁকে এভাবে আটকানো যায় না।
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার কটাক্ষ, পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। যে তৃণমূল বলেছিল ভবানীপুর ঘরের মাটি, জেতা কোনও ব্যাপার নয়। এখন কীসের ভয়ে তারা বারবার বাধা দিচ্ছে? খিদিরপুরে মমতার সভা রয়েছে। তাঁর সভা হলে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় থাকে? প্রশ্ন বিজেপি নেতার। তিনি আরও বলেন, নন্দীগ্রামের হারের আতঙ্ক থেকেই বিজেপি-র প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তৃণমূূল নেতামন্ত্রীরা প্রচারে নেমে পড়েছেন। কিন্তু বিজেপি প্রচার শুরু করলেই নৈব নৈব চ। এ নিয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে এদিনের ঘটনায় তৃণমূল নেতা তাপস রায়ের কটাক্ষ, “সভ্যতা, শালীনতা বোধ যদি বিজেপি নেতাদের না থাকে তখন এ ধরনের ঘটনা তো ঘটবে।” তাঁর আরও মন্তব্য দিলীপ ঘোষের জায়গায় যিনি এলেন, তাড়াতাড়ি নিজে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার জন্য এমন সব ঘটাচ্ছেন।