কলকাতা: বগটুই কাণ্ড (Bagtui Massacre) নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা জোরাল হচ্ছে। ২১ মার্চ নৃশংস নরহত্যালীলা বীরভূমের অখ্যাত গ্রামকে রাতারাতি জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্র বিন্দুতে নিয়ে এসেছিল। বগটুই গ্রামে শিশু মহিলা সহ ৯ জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এক সপ্তাহ কেটে গেলেও বগটুই কাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ক্রমেই বাড়ছে। ঘটনার পর রাজ্য সরকারের তৈরি সিট তদন্ত শুরু করলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে তুলে নিয়েছে সিবিআই (CBI)। সিবিআই তদন্তভার হাতে তুলে নেওয়ার পর থেকে জেলা তৃণমূল সভাপতির এই ঘটনায় জড়িত থাকা নিয়ে চাপান-উতোর ক্রমেই বাড়ছে। বিজেপির বিশেষ প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যেই সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) কাছে এই ঘটনার ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ রিপোর্ট পেশ করেছেন। সেই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। উত্তরবঙ্গে মহাকাল মন্দির থেকে পুজো দিয়ে বেরিয়ে বিজেপি রিপোর্ট নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । মমতার মন্তব্য প্রসঙ্গেই এবার মুখ খুললে বিজেপির ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দলের সদস্য তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুকান্ত মজুমদার অনুব্রত মণ্ডল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ নিয়ে বলেন, “উনি বেশ কিছুদিন ধরেই অসংলগ্ন কথা বলছেন। মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই অপ্রকৃতস্থ কথা বলেন। উনি বলছেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ মোদীজি লাগিয়েছেন। নিগৃহীতের পরিবার জানিয়েছে টাকা ভাগ নিয়ে এই গণ্ডগোল এবং টাকার ভাগ অনুব্রত মণ্ডলের কাছে পৌঁছাত। আমরা যা জানতে পেরেছি, সেটাই রিপোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারির কোনও সুপারিশ করিনি, ওটা মুখ্যমন্ত্রী দাবি। তিনি না জেনে এরম অনেক কিছুই বলেন। কোন দিন তিনি বলবেন আইনস্টাইনও তাঁর বন্ধু। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই… মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই ঘটনার জন্য বিজেপি দায়ী, কিন্তু ২০২১ সালের ভোটে ওই গ্রামে বিজেপি মাত্র ১৮ টি ভোট পেয়েছে।”
বগটুই কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকরা বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করছিলেন। সেই প্রসঙ্গে বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ বলেন, “এতবড় ঘটনাকে উনি শর্ট শার্কিট বলে চালাতে চেয়েছিলেন। পরে ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পর তিনি নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসেন। প্রথম থেকেই উনি ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে হয়েছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষাভাবে এই ঘটনার সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল জড়িত। এসডিপিও কোনও পদক্ষেপ করেননি। তাঁর কর্তব্য গাফিলতি ছিল।” সুকান্ত জানিয়েছেন, বিজেপি সভাপতি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠাবেন।