কলকাতা: হিরণ্ময় জল্পনার কি অবসান? নাকি রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু হয় না- সেই অমোঘ সত্য এক্ষেত্রেও সমান প্রাসঙ্গিক! নিয়োগ দুর্নীতি-অমর্ত্য বিতর্কে মশগুল বঙ্গভূমে বিগত কয়েকদিনে আলোচনার আরেক রসদ হিরো হিরণ। বিজেপির তারকা বিধায়ক শীঘ্রই যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে (Trinamool Congress), দফায় দফায় ছড়িয়েছে এই জল্পনা। এমনকী সদ্য হিরণ চট্টোপাধ্যায় (Hiran Chatterjee) তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন বলে শোনা যায়। সম্প্রতি মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর অজিত মাইতির সঙ্গে তাঁর একটি ছবিও ভাইরাল হয়। তারপর থেকেই আরও জোরালো হয়েছিল তাঁর ঘাসফুল ঘরে ফেরার জল্পনা। কিন্তু, এরইমধ্যে টিভি-৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘চোরেদের’ দলে যাচ্ছেন না। হিরণের অকপট উত্তর, “আমার ফেসবুক টুইটারে গেলে দেখতে পাবেন, মানুষ একটাই কথা বলছেন। বলছেন, দাদা ওই চোরের দলে যাবেন না। কারণ, চোরের দলে গেলে পুরো বাংলা শেষ হয়ে যাবে।”
শুক্র রাতে শুভেন্দু-সাক্ষাৎ
সূত্রের খবর ছিল, শুক্রবারের রাতেই দেখা হয়েছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং হিরণের। হিরণ-শুভেন্দুর এক টুকরো ভিডিয়োও প্রকাশ্যে আসে। সেখানে দেখা যায়, হিরণের কাঁধে হাত রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাতেই খবর মিলেছিল, শুভেন্দুর সঙ্গে বৈঠকেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে হিরণ সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূলে ফিরছেন না। তিনি রয়েছেন বিজেপিতেই। এমনকী ঘাসফুল প্রতীক লাগানো দেওয়ালের সামনে সোফায় বসে তৃণমূল নেতার সঙ্গে তাঁর ছবিটি সফ্টওয়্যারের কারসাজিতে তৈরি বলেও দাবি করেছিলেন এই বিজেপি বিধায়ক। এমনটাই খবর ছিল সূত্রের। এদিন এ প্রসঙ্গে হিরণ ফের বলেন, “কত ছবি রয়েছে যেখানে আমি আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বসে রয়েছি। অভিষেক আর আমি সোফাতে একসঙ্গে বসে আছি এরকমও কত ছবি আছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০২১ সালের আগে পর্যন্ত প্রতিটা জেলায় জেলায় আমরা ঘুরেছি। কত হোটেলে থেকেছি। একইগাড়িতে বসে গিয়েছি। উনি বাঁদিকে বসতেন, আমি ডানদিকে বসতাম। সামনে ওনার সেক্রেটারি সুমিত বসতেন। এখন যদি কোনও একটা ছবি ডিজিটালি বিকৃত করে কিছু করেন, তাহলে কিছু করার নেই।”
ওই ছবি কি সত্যিই বিকৃত?
প্রশ্ন করতেই তৃণমূলকে ‘দেউলিয়া পার্টি’ বলে কটাক্ষ করে হিরণের চাঁচাছোলা আক্রমণ, “একটা চোর-ডাকাতদের দলের এতটা ক্রাইসিস যে তাঁরা একটা ছবি দেখিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির একতা, বিশ্বাস, বিজেপির দৃঢ়তা, প্রতিশ্রুতিকে নষ্ট করতে চাইছে।” তবে কি সত্যিই ওই ছবি বিকৃত? হিরণের উত্তর, “আমি কী করে জানব! যে ছবি আমার নিজের তোলা নয়, যা নিয়ে আমার কোনও আইডিয়া নেই তা নিয়ে কী করে বলব। গতকাল আমি শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে গিয়েছিলাম। সেখানে কিছু ছবি তোলা হয়েছিল। আমি জানি, কারণ সেটা আমার সামনেই তোলা হয়েছে। কিন্তু, যে ছবিটা আমি জানিই না। ওই ছবিতে পুরনো ছবি লাগিয়ে দিয়েছে না কী করেছে তা তো আমি জানিই না। তা নিয়ে কী করে কিছু বলব।”