
কলকাতা: কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই তাঁদের। কখনও ডেটা এন্ট্রি, কখনও ডেডলাইন নিয়ে প্রশাসনিক চাপ। তবে এই সব কিছুর উর্ধ্বে রয়েছে অন্য একটা চাপ। যা নিয়ে বিশেষ কথা হচ্ছে না বলেই দাবি বিএলও ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের। শনিবার রাজ্য়ের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়েছিলেন তিনি। ঐক্য মঞ্চ ও রাজ্যের সকল বিএলও-দের মুখে-মুখে ওঠা অভিযোগগুলিকেই কমিশনের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি।
সিইও দফতরের কাজ মিটিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয় বিএলও ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা। সেই সময়ই এই বড় অভিযোগের কথা তুলে ধরেন স্বপন মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘বিএলও-দের উপর অন্য ভাবে চাপ তৈরি করা হচ্ছে। গতকালও আমার কাছে মালদহ থেকে ফোন এসেছিল। আমি জানতে পারি, একজন বাবা কিংবা ঠাকুমার পরিচয় দিয়ে এক সঙ্গে চার-পাঁচজন ব্যক্তি নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করাচ্ছেন।’
এক্ষেত্রে সে চার-পাঁচজন ব্য়ক্তির সঙ্গে ২০০২ সালের তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে এমনটাও নয়। স্বপন মণ্ডলের কথায়, ‘বিএলও-দের উপর রীতিমতো চাপ তৈরি করা হচ্ছে। যাতে তাঁরা ওই ভাবেই ফর্মটা পূরণ করেন। তাঁরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। কিন্তু এরকমটা হলে কীভাবে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি হবে?’ এই নাম নথিভুক্তকরণের মডেলে কোনও নির্দিষ্ট দলের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে কিনা সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি। কিন্তু একটা রাজনৈতিক চাপ রয়েছে বলেই মত তাঁর। পাশাপাশি, এই ঘটনার সঙ্গে ERO-রা জড়িত রয়েছে বলেই অভিযোগ তুলেছেন বিএলও ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক।
কমিশন প্রথমেই বলে দিয়েছিল, ফর্ম সংক্রান্ত কোনও ভুল-ত্রুটি হলে বিএলও-দের ছেড়ে কথা বলা হবে না। একদিকে কমিশনের খাঁড়া, অন্যদিকে ‘রহস্যজনক চাপ’, তা হলে কি এসবের মাঝেই দমবন্ধ হচ্ছে বিএলও-দের? স্বপন বাবুর দাবি, ‘কোনও সমস্যা হলে তো কমিশন বিএলও-দের ধরবে। তাই আমরা বিএলও অ্যাপে ফর্ম জমা দেওয়ার আগে একটা রিমার্কস অপশনের দাবি জানিয়েছি। যেখানে বিএলও-রা সংশ্লিষ্ট ভোটার সম্পর্কে নিজেদের মন্তব্য লিখে দিতে পারবেন। সিইও দফতর এই নিয়ে সহমত পোষণ করেছেন।’
ইতিমধ্য়েই রাজ্যে বেশ কয়েকটি বিএলও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গিয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়ী হয়েছে এসআইআর সংক্রান্ত প্রশাসনিক চাপ। ইতিমধ্য়েই মৃতদের পরিবারের জন্য দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে নবান্ন। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণকে ‘ভিক্ষা’ বলে কটাক্ষ করে, টাকার অঙ্ক বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন বিএলও ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি, ERO-রা অহেতুক ২৫ তারিখের ডেডলাইন দিয়ে চাপ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ তাঁর।