Bowbazar in Crisis: মাথার উপর ভেঙে পড়ল চাঙর! বউবাজারে ফিরল ‘মেট্রো ভয়’

East-West Metro: এখন সেই দুর্গাপিতুরি লেনের মাটির নীচ দিয়েই প্রতি দশ মিনিটে ছুটে যায় একটা মেট্রো। শুধু মাটির উপরে একা দাঁড়িয়ে থাকে ধ্বসে পড়া, কাঠামোহীন বাড়িগুলি। এবার সেই দুর্গাপিতুরি লেনের 'ভয়' ঘিরে ধরেছে বউবাজারের মদম দত্ত লেনের একটি বাড়িকেও।

Bowbazar in Crisis: মাথার উপর ভেঙে পড়ল চাঙর! বউবাজারে ফিরল মেট্রো ভয়
বউবাজারে আতঙ্কImage Credit source: নিজস্ব চিত্র

| Edited By: Avra Chattopadhyay

Dec 07, 2025 | 5:40 PM

কলকাতা: বউবাজারের মদন দত্ত লেনে স্মৃতির প্রত্যাবর্তন। খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। ১৯ নম্বর দুর্গাপিতুরি লেন, ছয় বছর আগে একের পর এক বাড়িতে ধরে ফাটল। অভিযোগ ওঠে মেট্রোর কাজের জন্য এই পরিস্থিতি। এরপরের পাতাগুলো যেন উল্টে দিয়েছে কোনও ঝোড়ো হাওয়া। রাতারাতি দুর্গাপিতুরি লেন হয়েছে ফাঁকা। পিতৃপুরুষের ভিটে মাটি ছেড়ে উঠতে হয়েছে হোটেলে। কোনও এক ‘অভিশাপে’ দুর্গাপিতুরি লেন হয়েছে অমসৃণ। তবে দিনে-দিনে মসৃণ হয়েছে পাতালপথ।

এখন সেই দুর্গাপিতুরি লেনের মাটির নীচ দিয়েই প্রতি দশ মিনিটে ছুটে যায় একটা মেট্রো। শুধু মাটির উপরে একা দাঁড়িয়ে থাকে ধ্বসে পড়া, কাঠামোহীন বাড়িগুলি। এবার সেই দুর্গাপিতুরি লেনের ‘ভয়’ ঘিরে ধরেছে বউবাজারের মদন দত্ত লেনের একটি বাড়িকেও। রবিবার ভর দুপুরে ভেঙে পড়েছে চাঙর। অভিযোগের তির সেই মেট্রো দিকে। গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন পাপ্পু সিং নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িটিরও বেশ বয়স হয়েছে। প্রায় ৬০-৭০ বছর ওই এলাকাতেই ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এটি। রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ বাড়ির অন্দরমহল হয়ে বাথরুমের দিকে যাচ্ছিলেন পাপ্পু সিং। সেই সময়ই সিলিংয়ের একটি অংশ থেকে ভেঙে পড়ে চাঙর। মাথায় ও কাঁধে আঘাত পান পাপ্পু। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, মেট্রোর কম্পনের কারণেই এমন ঘটেছে। তাঁরা এও জানিয়েছেন, যখন সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছিল, সেই সময় দীর্ঘদিনের জন্য বাড়ি ছেড়ে হোটেলে ছিলেন তাঁরা। পরবর্তীতে মেট্রো কর্তৃপক্ষের অনুমোদনেই আবার এই বাড়িতে ফিরে আসে পরিবার। সেই সময় বাড়িটিকে ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরেও এমন কাণ্ড।

পাপ্পু সিংয়ের পরিবার ছাড়াও ওই বাড়িটিতে আরও ১৫টি পরিবার রয়েছে। এদিন ওই বাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, ‘যে অংশ থেকে চাঙর ভেঙেছে সেখানেই তো আমাদের রান্নাঘর। ভয় করছে। যদি গোটা ফ্লোরটাই ভেঙে পড়ে, তখন কী হবে?’ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মেট্রো ইঞ্জিনিয়াররা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। পাশাপাশি, ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বিধায়ক নয়না গঙ্গোপাধ্য়ায়ও। এদিন তিনি বলেন, ‘ওরা বলছে কম্পন হয়। বিশেষজ্ঞরাও তো বলেছিলেন, নীচে মেট্রো চললে উপরে কম্পন হবে। আমি জানি না এখানে এরা (মেট্রো কর্তৃপক্ষ) কী করতে চলেছেন।’

স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞ তথা অধ্যাপক পার্থপ্রতীম বিশ্বাস বলেন, ‘কাঁপুনি হবে ঠিকই। কিন্তু ফিট সার্টিফিকেট দেওয়ার সময় বলা হয়েছিল কাঁপুনির ভূপৃষ্ঠের উপর পর্যন্ত এসে পৌঁছবে না। আবার এটাও মাথায় রাখা প্রয়োজন এই বাড়িগুলি শতাব্দী প্রাচীন। সুতরাং শুধুই মেট্রো নয়, ট্রাক গেলেও কম্পন হবে। আর এটা যদি মেট্রোর কারণেই হয়, তা হলে ওই এলাকার অন্য় বাড়িগুলিতেও তার প্রভাব বোঝা যাবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের আরও একটু সতর্ক হওয়া উচিত।’