
কলকাতা: স্নাতক পরীক্ষার দিন নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্তের সঙ্গে সংঘাত রাজ্যের। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠার দিন কেন পরীক্ষার তারিখ ফেলা হয়েছে সেই নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। সাংবাদিক বৈঠকে শান্তা জানিয়েছেন, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন পরীক্ষার তারিখ বদলের জন্য। তবে বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী যেহেতু পরীক্ষার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাই তাঁদের কথা ভেবেই দিন বদল করা হবে না বলে জানান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। আর তাঁর এই পদক্ষেপে চটেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর বক্তব্য, যে মুখ্যমন্ত্রী কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না, তাঁর অনুরোধ ফেরানো সঠিক হয়নি। এর বিরুদ্ধে পরবর্তীতে পদক্ষেপের কথাও বলেন ব্রাত্য।
এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না। উনি চাইলে ‘কেয়ারটেকার’ ভিসিকে সরাতে পারতেন। রাজ্যপাল উপাচার্যকে যেহেতু বিশেষ স্নেহ করেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এই স্নেহকে মান্যতা দিয়েছেন। সারাননি। সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন। তবে রাজ্যের পদাধিকারী যিনি কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না সেটা রাখা যেত বলে আমার মনে হয়।” যেহেতু পরীক্ষার দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস রয়েছে, সেই দিন যদি পরীক্ষা দিতে কেউ না পারেন তাহলে সেই পড়ুয়ার কী হবে? এর উত্তরে ব্রাত্য বলেন, “উনি হাস্যকর কথা বলছেন। তাঁদের জন্য নাকি আরও একটা পরীক্ষা হবে। একই পরীক্ষা যে দু’টো হতে পারে, ভূ-ভারতে শুনিনি।” এরপরই শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “কিছুটা মগের মুলুক চলছে। এটা গণমাধ্যমকে বলব না। কী নেব শীঘ্রই জানতে পারবেন।”
কী নিয়ে বিতর্ক?
২৮শে অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পরীক্ষা কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর পরপরই পরীক্ষার দিন বদল করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় শিক্ষা দফতর। সোমবার ছিল সিন্ডিকেট মিটিং। সেই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “আজ সিন্ডিকেটে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি এটা উল্লেখও করেছেন যে মুখ্য়মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। আর তাঁর অনুরোধ মানা উচিতও বলেন তাঁরা। তবে হাউস সর্বসম্মতিক্রমে ২৮শে অগস্টের পরীক্ষার তারিখ ওই জায়গাতেই রেখেছে। তিরিশ হাজার ছাত্র ছাত্রী মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাই কিছু ছাত্রের জন্য আমরা ব্যাপক ছাত্রদের এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। তাঁরা পরীক্ষা দেবে। আমরাও ঘোষিত তারিখ একই রেখেছি।”