কলকাতা: কোনও স্থায়ী উপাচার্য নেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু যাদবপুরেই নয়, ৩৩টি রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়েই একই অবস্থা। উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে জটিলতা আদালতের দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছে। শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন সেই মামলা। তবে এসবের মধ্যেই রাজ্যে উচ্চ শিক্ষা দফতর যাদবপুরের সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু এরপরও রাজ্যের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুরের সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন ঘিরে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। কেন অনুমতি না নিয়েই সমাবর্তনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক ডেকেছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ? জানা যাচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে যাদবপুরের উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজভবনের থেকে।
আর এই নিয়েই এবার রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে নিশানা করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর বক্তব্য, বিভিন্ন আইনি জটিলতা থাকা সত্ত্বেও যাদবপুরের ঐতিহ্য ও পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে উচ্চ শিক্ষা দফতর সমাবর্তনের অনুমোদন দিয়েছিল। এক্স হ্যান্ডেলে ব্রাত্য লিখেছেন, ‘রাজ্যপাল সমাবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় কোর্ট মিটিং ডাকতেই সম্মতি দেননি, আইনি অনিশ্চয়তার কারণ দেখিয়ে। অথচ উনি এই একই আইনি পরিমণ্ডলে রাজ্য সরকারের অনুমোদন না নিয়েই একাধিক সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন করিয়েছেন।’ ব্রাত্যর প্রশ্ন, তাহলে কি পড়ুয়াদের স্বার্থ নয়, সরকারের বিরোধিতাই সব কিছুর মূলে? নাম না করে রাজ্যপালকে ‘বোম্বাগড়ের রাজা’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে এসবের মধ্যেই আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়া অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সমাবর্তন ইস্যুতে আলোচনার জন্য বুধবারই জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কমিটি বৈঠক ডেকেছিলেন যাদবপুরের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। কিন্তু সেই বৈঠকের আগেই নয়া বিপত্তি। বেশ কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে এদিন বিকেলে উপাচার্যের ঘরের সামনেই অবস্থানে বসে গিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ। অধ্যাপকদের বক্তব্য, তাঁরা কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে বার বার আসছেন উপাচার্যের কাছে। কিন্তু কোনও দাবি পূরণ হচ্ছে না। বেশ কিছু প্রজেক্টের কাজের জন্য উপাচার্যের থেকে রিকুইজিশনে সই পাওয়া যাচ্ছে না বলে ক্ষোভ তাঁদের।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানাচ্ছেন, “রাজভবন থেকে একটি চিঠি এসেছে। সেই চিঠির ভিত্তিতে এখন সমাবর্তন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সেই কারণে এক্সিকিউটিভ কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেই ইসি বৈঠকে আমাকে যেতে দিলেন না (অবস্থানরত অধ্যাপকরা)। তাঁদের বক্তব্য, এখনই তাঁদের সব দাবি-দাওয়া পূরণ করতে হবে।”