
কলকাতা: বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেফতার হোটেল মালিক ও ম্যানেজার। তাঁদের বিরুদ্ধে ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা রুজু হয়েছে। হোটেল মালিকের নাম চাওলা। প্রথমে গ্রেফতার করা হয়, হোটেলের ম্যানেজারকে, তখন মালিক পলাতক ছিলেন। পরে ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতার করা হয় মালিককে। অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারাতে মামলা রুজু হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই ঘটনাস্থলে পৌঁছে শুভেন্দু অধিকারী করেন বিস্ফোরক অভিযোগ। পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান তিনি। শুভেন্দু বলেন, “একটা দুর্নীতিগ্রস্ত থানা হল জোড়াসাঁকো থানা। এখানকার হোটেলের মালিক চাওলার সঙ্গে চিটা-গুঁড়ের ব্যবসা রয়েছে। হোটেলে কোনও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। হোটেলের বাহির পথ, এর্মাজেন্সি পথ কিচ্ছু নেই। তারপরও কারবার চালাচ্ছিলেন, টাকার বিনিময়ে।”
দিঘা থেকে ফিরেই ঘটনাস্থলে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, মেয়র ফিরহাদ হামিক, পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা-সহ আধিকারিকরা। দমকলমন্ত্রী বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব, অনেক কিছু না জানিয়েই মালিক করছিলেন। ফার্স্ট ফ্লোরে একটা ডান্স বার তৈরি করছিলেন, তার অনুমতি রয়েছে কিনা দেখতে হবে। ২০২২ সালের পর থেকে এরা আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেনি। মালিক, ম্যানেজার গ্রেফতার হয়েছে, কেউ ছাড় পাবে না। এখানে সকলে ধোঁয়াতেই মারা গিয়েছেন, আগুনে নয়। আমরা অনেক নির্দেশ দিয়েছি, কিন্তু অনেকে মানছেন না। আমরা ঠিক করেছি, যারা মানবে না, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব। দরকার হলে বন্ধ করে দেব।”
জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে ৬ নম্বর মদনমোহন বর্মন লেনে তৈরি হয় এই হোটেল।প্রথমে চারতলা ছিল। তারপর সেই হোটেলের উপরে আরো দুই তলা করা হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে হোটেলে বেশ কিছু অংশ পুরসভার অনুমোদন ছাড়াই সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার রাতে যখন আগুন লাগে, তখন হোটেলের এমার্জেন্সি গেট দিয়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু এমার্জেন্সি গেটের বাইরেও মজুত করা ছিল নির্মাণ সামগ্রী। নির্মাণ সামগ্রী স্তূপাকার করে রাখা ভিতর দিক থেকে এমার্জেন্সি দরজার সামনে।
যে দরজা খোলা থাকলে বা নির্মাণ সামগ্রী রেখে দেওয়া হলে, এই প্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যেতে বলেই মনে করছেন নির্মাণ বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হোটেলের ছাদের উপরে প্রায় চার থেকে পাঁচটি বেআইনিভাবে ঘর তৈরি করা হয়েছে।