Calcutta High Court: আজই গ্রেফতার করতে বলছি, আদালতে ডাকো: SSC চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে বিচারপতি
Calcutta High Court: বস্তুত, ২০২৪ সালের ২৮ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তার মধ্যে SSC ১২ হাজার ৪৮২ জন প্রার্থীর কাউন্সেলিং করে চাকরিতে যোগদান করিয়েছেন।

কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের তোপের মুখে এসএসসি (SSC) চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। ২০১৬ আপার প্রাইমারি নিয়োগ এখনো কেন শেষ নয়? প্রশ্ন আদালতের। “শিক্ষামন্ত্রী হোক বা রাজ্যের যে কেউ, কাকে বললে সমাধান হবে? খুঁজে বের করে সমাধান করুন।” মন্তব্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। আগামী ১৬ মে মামলার পরবর্তী শুনানি। নিয়োগ কীভাবে জানাতে হবে, সবটা জানাতে হবে আদালতকে।
বস্তুত, ২০২৪ সালের ২৮ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু তার মধ্যে SSC ১২ হাজার ৪৮২ জন প্রার্থীর কাউন্সেলিং করে চাকরিতে যোগদান করিয়েছে। এখনও অবশিষ্ট রয়েছেন ১৪৮২ জন। এই নিয়ে ফের মামলা হয় কোর্টে। সেই সময়ই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সিলিং সম্পন্ন করার। কিন্তু তা না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হয়। এ দিন কার্যত ক্ষুব্ধ হন দুই বিচারপতি। চেয়ারম্যানের সামনেই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, “আজই গ্রেফতার করতে বলছি। আদালতে ডাকো।”
এ দিন আদালতের শুনানি চলাকালীন কথোপকথন একনজরে…
বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়: শূন্যপদ তখন বলা হয় যখন সেটা থাকে। অনুমান করে আবার কখনো করা হয় নাকি? আপনারা সময়ের কথা মানেননি। মামলার সময় মনে ছিল না?
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: আপনার সেটাই রাজ্যকে বলা উচিৎ ছিল। আমাদের বলা হয়েছিল রিসার্ভেশন মানা হয়নি। এখন বলছেন আপনার ভ্যাকেন্সি নেই? কবে ডাকবেন?
আইনজীবী সপ্তাংশু বসু (চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের আইনজীবী): আমার কিছু করা সম্ভব নয়। ১ হাজার ৪৬৩ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু শূন্য পদের সঙ্গে মেলেনি। রিভিউ অসম্ভব। শীর্ষ আদালতে মামলা হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশন নিজে নতুন পোস্ট করতে পারে না। রাজ্যকে করতে বললেই সম্ভব।
আইনজীবী সপ্তাংশু বসু: ঘেরাওয়ের জন্য সমস্যা হচ্ছে। ১৫ দিনের মধ্যে হবে। লজিস্টিক সমস্যায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: চেয়ারম্যানয়েপ সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী, সচিবের দারুণ সম্পর্ক। ওঁকে নির্দেশ দিন সমাধান করতে। এসএস এডামেন্ট। কোনও নিয়োগ করা হচ্ছে না।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: আমরা সমাধান করতে চাই। এটা রুটি রুজির বিষয়। এরা সাফার করছে। গঙ্গা দিয়ে অনেক জলের বয়ে যাওয়ার পর বলছেন বুঝিনি। কয়েকজনকে নিয়ে বসে আছেন? আপনি কীসের এক্সপার্ট?
আইনজীবী সপ্তাংশু বসুর উদ্দেশ্যে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: সিনিয়র হিসেবে এই মামলা নেওয়ার আগে আপনার ভাবা উচিৎ ছিল।
বিচারপতি পার্থ সারথী চট্টোপাধ্যায়: আপনি ইতিমধ্যেই অবমাননার মধ্যে পড়ে গেছেন। কাজ কবে শেষ হবে সেটা স্পষ্ট করে বলুন।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: ১৬ তারিখের মধ্যে যাবতীয় কাজ শেষ করার চেষ্টা করুন। চেয়ারম্যানকে বাড়িতে বসে ভাবতে বলুন উনি ডিভিশন বেঞ্চের অবমাননার মুখে। শিক্ষামন্ত্রী হোক, রাজ্য হোক যার থেকে হোক জিজ্ঞেস করুন কী করবেন। পাঁচটা হলফনামার পর এটা অবিশ্বাস্য।
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: আপনি (চেয়ারম্যান) সেফ খেলছেন। কীভাবে সমাধান করবেন বুঝে নিন
সুশান্ত ঘোষ, চাকরিপ্রার্থী বলেন, “২০২৪ সালের ২৮ অগাস্ট ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল ১৪ হাজার ৫২ জনের চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। তার মধ্যে SSC ১২ হাজার ৪৮২ জন প্রার্থীর কাউন্সেলিং করে চাকরিতে যোগদান করিয়েছেন। অবশিষ্ট রয়েছে ১৪৮২ জন। আমরা এরপর মামলা করি। আদালত বলেছিল চার সপ্তাহের মধ্যে কাউন্সিলিং সম্পন্ন করার। কিন্তু দেখলাম সেটা হল না। সেই আদালত অবমাননার মামলায় আজ বিচারপতি জানান আগামী ১৬ই মে-র মধ্যেই আমাদের কাউন্সিলিং করে এই রিপোর্ট পরবর্তী শুনানির দিন জমা দিতে হবে।”