
কলকাতা: আগামী ৩০ এপ্রিল দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠাও হবে ওই দিন। আর ওই দিনই কাঁথিতে আর এক সভার আয়োজন ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ‘সনাতনী ধর্ম সম্মেলন’ করার অনুমতি না মেলায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে এক সংগঠন। রাজ্যের প্রশ্ন, কারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে? কারা দিচ্ছে টাকা? ধর্মীয় অনুষ্ঠান আদৌ বন্ধ করা সম্ভব কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। আজ, শুক্রবার শেষ হল সেই মামলার শুনানি। আগামী সোমবার বিকেলে হবে রায়দান।
মামলাকারীর আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “কোন ধর্মীয় রীতি কবে হবে, কোন পদ্ধতিতে পালন করা হবে, তা ঠিক করার অধিকার পুলিশের নেই। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন কেন ওই অনুষ্ঠান করতে হবে সেটা জানার অধিকারও পুলিশের নেই।”
আইনজীবী আরও জানান, দিঘার জগন্নাথ মন্দির থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে এই ধর্মীয় কর্মসূচি পালন করার আবেদন জানানো হয়েছে। রাজ্যের কাছে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানতে চান, জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে কত মানুষ যাবেন? রাজ্য জানায়, এক লক্ষ মানুষের যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মামলাকারীদের আরও দাবি, ধাপে ধাপে ৫০,০০০ মানুষ যাবেন ওই অনুষ্ঠানে।
রাজ্যের প্রশ্ন, ‘মামলাকারীরা এই পুজো তাদের বাড়িতে করতে পারেন না?’ বিচারপতি জানতে চান, ‘২০০০ মানুষ নিয়ে করলে কী অসুবিধা?’ কিন্তু ‘কে মানুষ গুণে রাখবেন?’ প্রশ্ন রাজ্যের। রাজ্যের বক্তব্য, জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে মোতায়েন থাকবে বড় সংখ্যার পুলিশও। বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠানে আমরা কী করে না করতে পারি?’ রাজ্যের দাবি, এটা রাজনৈতিক কারণে করা হচ্ছে।
কারা এই অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য। তাদের সওয়াল, “৪-৫ জন গ্রামবাসী এই ব্যবস্থা করছেন এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তারা কোথা থেকে এই টাকা পাবেন? তাদের টাকার উৎস কী? বিরোধী দলনেতার নাম নিয়ে রাজ্য বলে, এর পিছনে শুভেন্দু অধিকারী আছেন। তিনি পিছনে আছেন কেন? তাঁকে সামনে আসতে বলুন।”
রাজ্যের স্পষ্ট দাবি, ইচ্ছাকৃত প্রশাসনকে অসুবিধায় ফেলার জন্য এই কর্মসূচি করার চেষ্টা হচ্ছে। মামলাকারীর আবেদন, অন্তত পাঁচ হাজার লোক নিয়ে ধর্ম সম্মেলন করার অনুমতি দেওয়া হোক।
আগামী সোমবার এই মামলার রায়দান হবে। তার মধ্যে পুলিশকে বিষয়টি দেখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।