কলকাতা: খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির পরিচালন বোর্ড। সেই বোর্ড গঠন নিয়ে যে ঝামেলা হয়েছে, তার তদন্ত করবে পুলিশ সুপারই। শুক্রবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, বোর্ড গঠনে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীও, নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। কোর্ট জানিয়েছে, বিডিও অফিসের পরিবর্তে জেলাশাসকের দফতরে হবে বোর্ড গঠনের সভা। শুক্রবার মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত নির্দেশ দেয়, রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সিআরপিএফের নিরাপত্তায় হবে বোর্ড গঠন। সিআরপিএফের জন্য কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চাইবে রাজ্য। আর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার। গতদিনের তুলনায় আরও বেশি পরিমাণে রাজ্য পুলিশ মোতায়েন করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিজেপি প্রার্থী খুকুমণি মণ্ডল। এদিন শুনানি চলাকালীন আইনজীবী মোবাইল ফোনে বোমাবাজির ফুটেজ দেখেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এরপরই মামলায় এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট যুক্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি সেনগুপ্ত প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের কি মনে হয় না আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে? আদালত মামলাকারীদের নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছিল। মামলাকারীরা যদি এফআইআর দায়েরের ক্ষেত্রে কোনও ভুল করেও থাকেন পুলিশ কী করছিল?’
খেজুরি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে শিশির অধিকারীর কনভয়ে হামলারও অভিযোগ ওঠে। এই মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানান সাংসদ শিশির অধিকারী। পাথর ছোড়া হয়েছে, গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে বলে জানান শিশির অধিকারীর আইনজীবী। এদিন বিচারপতি জানতে চান, পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও ঘটনার মোকাবিলা করা গেল না কেন? এরপরই আদালত মনে করে, তাহলে বাইরের বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন। মামলাকারী আবেদন করেন, বিডিও অফিসের পরিবর্তে জেলাশাসকের অফিসে বোর্ড গঠনের সভা করা হোক। একইসঙ্গে বলেন, এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়েছে কি না রাজ্যের কাছে জানতে চাওয়া হোক। রাজ্যের আইনজীবী জানান, বিডিও অফিসের ৫০০ মিটারের বাইরে বোমা ফেটেছে। মোট ৯ জন গ্রেফতারও হয়েছে।
রাজ্যের কাছে আদালত জানতে চায়, কেন এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট এই মামলায় যুক্ত করা হয়নি। পুলিশ কি দু’টি আইনের পার্থক্য বুঝতে পারছে না, জানতে চান বিচারপতি। প্রশ্ন করেন, ‘পুলিশ কি সত্যিই বুঝতে পারছে না নাকি নির্বোধ সেজে থাকার ভান করছেন?’ একইসঙ্গে বলেন, আদালতকে বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই। যেখানে মানুষের প্রাণ সংশয় আছে, সেখানে পুলিশের এই ভূমিকা?, প্রশ্ন বিচারপতির। এই ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।