
কলকাতা: মুর্শিদাবাদের জাফরাবাদের নিহত হরগোবিন্দ দাসের মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। মুর্শিদাবাদ সংক্রান্ত বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলা প্রধান বিচারপতি অন্য বেঞ্চে পাঠিয়েছেন। এই মামলাও অন্য কোন বেঞ্চে পাঠানোর জন্য সেখানেই আবেদন করতে নির্দেশ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের।
মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “এই মামলায় এখন আর কিছু নেই। অপহরণ কোথায় হল? প্রধান বিচারপতির কাছে যান। উনি এই মামলা নতুন করে পাঠাবেন।” বিচারপতির আরও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “এখন আইনজীবীরা তাঁদের রাজনৈতিক মক্কেলদের সঙ্গে নিজেদের মিশিয়ে ফেলছেন। এটা দুর্ভাগ্যের। রাজনৈতিক নেতাদের মামলার কারণে তাঁরাও রাজনৈতিক সমর্থনে বলিয়ান হয়ে যাচ্ছেন এবং আদালতের সামনে সেই ক্ষমতা দেখাচ্ছেন।”
এই সূত্রেই আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “আমি তো বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বা বলাই রায়কে আদালতের সামনে রাজনৈতিক আচরণ করতে দেখিনি।”
প্রসঙ্গত, পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় জাফরাবাদের নিহত বাবা-ছেলের পরিবার। মামলাকারীদের পাশে আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ ইস্যুতে গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সুতি, ধূলিয়ান, সামসেরগঞ্জ-সহ একাধিক এলাকা। বাড়ি ভাঙচুর, আগুন, লুঠপাঠ চলতে থাকে বেপরোয়াভাবে। সবথেকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ ওঠে জাফরাবাদে। বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাকে ঘিরে সরগরম হয় রাজ্য রাজনীতি। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। এই পরিস্থিতিতে সোমবার মুর্শিদাবাদে যাচ্ছেন মুখ্য়মন্ত্রী। এরই মধ্যে এসবের মাঝেই শোনা যায়, নিহত দুজনের স্ত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে সল্টলেকের সেফ হাউসে হদিশ মেলে তাঁদের। বর্তমানে সেখানেই রয়েছেন দু’জনে।
অভিযোগ, রবিবার রাতে বিধাননগর পূর্ব থানার ৪০ জন পুলিশ বিধাননগরের সেফ হাউসে যায়। দরজা ভেঙে নিহতদের পরিবারের লোকজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। পুলিশের দাবি, তাঁদের অপহরণ করা হয়েছে। অথচ নিহতদের পরিবারের লোকজনের দাবি, স্বেচ্ছায় বিধাননগরের সেফ হাউসে এসেছেন তাঁরা। এই মর্মে বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করার আবেদন জানান।