রাজ্যের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ পদক্ষেপ, আনিসুর মামলায় ভর্ৎসনা হাইকোর্টের

ঋদ্ধীশ দত্ত |

Mar 02, 2021 | 5:51 PM

নিম্ন আদালতের খালাস করার নির্দেশে এ দিন স্থগিতাদেশ জারি করেছে উচ্চ আদালত (Calcutta High Court)। রাজ্যের (WB Government) এই পদক্ষেপে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলে উল্লেখ করেছেন আদালতের বিচারপতি।

রাজ্যের দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ, আনিসুর মামলায় ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
ছবি- টুইটার

Follow Us

কলকাতা: হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ফের ধাক্কা রাজ্যের (WB Government)। তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনের মামলায় জেলে থাকা বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের (Anisur Raham) বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, নিম্ন আদালতের সেই খালাস করার নির্দেশে এ দিন স্থগিতাদেশ জারি করেছে উচ্চ আদালত। রাজ্যের এই পদক্ষেপে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন আদালতের বিচারপতি।

অতিসম্প্রতি রাজ্য সরকারে পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। যেখানে কুরবান শাহ খুনে মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমানকে সমস্ত মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে রাজ্য। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নিম্ন আদালত থেকে আনিসুরকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু, এই বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতা করে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে কুরবান শাহের পরিবার। সেই মামলাটি এ দিন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টচার্যের এজলাসে উঠলে তিনি তীব্র ভর্ৎসনা করেন রাজ্যকে। এই পদক্ষেপকে ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’, ‘ভাবনাচিন্তা বিহীন’ বলে আখ্যাও দেন। কেননা, একটি খুনের মামলায় রাজ্য যদি এভাবে হস্তক্ষেপ করে তবে অন্যান্য আসামীদের অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের নির্দেশে জারি করা হয় স্থগিতাদেশ।

এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেওয়া যায়, দিনকয়েক আগেই বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে থাকা একাধিক মামলা প্রত্যাহার করে নেয় রাজ্য। ইউএপিএ ধারায় থাকা মামলা প্রত্যাহার না করা হলেও নিম্ন আদালতের প্রায় ১৪৮ টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। আজকের শুনানিতে অবশ্য সেই প্রসঙ্গ উঠে আসেনি। তবে খুনের ঘটনায় মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি যে আদালত ভাল চোখে দেখছে না, সেটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: কেন ডবল ইঞ্জিন সরকার গড়তে হবে? গাজোলে গেরুয়া বসনধারীর মুখে পাটিগণিতের হিসাব

প্রসঙ্গত, বছর কয়েক আগে পাঁশকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দু-বিরোধী বলে পরিচিত এই নেতার দূরত্ব তৈরি হয়। পরে সেই বছরেই বিজেপিতে চলে যান আনিসুর। ঘটনাক্রমে ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর নবমীর দিন রাতে খুন হন পাঁশকুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কুরবান শাহ। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা আনিসুরের নাম। গ্রেফতার হন তিনি। সেই আনিসুরের বিরুদ্ধে মামলা ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল রাজ্য।

আরও পড়ুন: লক্ষ্য ‘সোনার বাংলা’, ২০টি জনসভা করতে পারেন মোদী, শাহের হতে পারে হাফ সেঞ্চুরি

ফলে জল্পনা শুরু হয়েছিল, জেল থেকে বেরিয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, নন্দীগ্রামের তেখালির জনসভা থেকে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করার সময়ই তৃণমূল নেত্রীর মুখে উঠে আসে আনিসুরের নাম। সেই সময়ই মমতা বলেছিলেন, ‘‘আনিসুরকে অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।’’ সুতরাং দেওয়ার লিখনটা স্পষ্টই ছিল। তবে আপতত তা আটকে দিল আদালত।

বঙ্গযুদ্ধ ২০২১: সব খবর পড়ুন এখানে

 

Next Article