
কলকাতা: রেডরোডে হনুমান জয়ন্তী পালনের আর্জি। শুক্রবার হিন্দু সেবা দলের সেই আর্জি খারিজ করে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। হলফনামা আদান প্রদানের প্রয়োজন রয়েছে বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি। রাজ্যকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে। তার দু’সপ্তাহের মধ্যে উত্তর দেবেন মামলাকারী। জুলাই মাসে হবে পরবর্তী শুনানি।
শুনানিতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘হঠাৎ রেডরোডে কেন পালন করতে হবে হনুমান জয়ন্তী? ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে রেড রোডেই যেতে হবে? যে অনুষ্ঠানের সঙ্গে তুলনা চলছে সেটি খিলাফত আন্দোলনের সময় থেকে পালন করা হয়। শহিদ মিনারে করুন অনুমতি দেব।’
রেড রোডে হনুমান জয়ন্তী পালন করতে চেয়ে মামলাকারী সওয়াল করেন, ‘সবার সমানাধিকার থাকা প্রয়োজন।’
এ কথা শুনে বিচারপতি ঘোষ বলেন, “আপনি কি ওই অনুষ্ঠানের ইতিহাস জানেন? ১৯১৯ সালে খিলাফত আন্দোলনের সময় থেকে ওই অঞ্চলে ওই অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। আগে ওই অনুষ্ঠান শহীদ মিনারে হত। জল জমার সমস্যার কারণে সেটা রেড রোডে পরিবর্তন করা হয়। সেটা হয় সম্ভবত ১৯৯৮ বা ১৯৯৯ সালে। ১০০ বছর ধরে এই কর্মসূচি হয়ে আসছে।”
মামলাকারীর আইনজীবী ময়ূখ মুখোপাধ্য়ায় জানান, সেনাবাহিনী অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘সেনার কোনও সমস্যা নেই। পুলিশের কী সমস্যা?’
এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন, “তাহলে ফোর্ট উইলিয়ামে গিয়ে করুন। যে কোনও জায়গায় অনুষ্ঠান হতে পারে। কিন্তু আদালতে এলে আদালতকে বিচার করে সবটা দেখতে হয়। কাল কেউ এসে বলবেন, আমি ওখানে দুর্গা পুজো করব, সেটা দেখতে হবে। আপনারা প্রথম করছেন তাই আপনাদের যুক্তি দিতে হবে।”
রাজ্য়ের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা হল, কোনও একটা কারণ থাকতে হবে। যেমন, দুর্গা পুজো কার্নিভাল হল একটি হেরিটেজ প্রোগ্রাম। ইউনেস্কো ট্যাগ আছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি আছে। রাজ্য়ের দাবি, রেড রোডে এই কর্মসূচি করার ক্ষেত্রে কী ধর্মীয় তাৎপর্য আছে, সেটা মামলাকারীরা বলতে পারছেন না। শুনানি শেষে রেড রোডে হনুমান জয়ন্তী পালনে ‘না’ করে দেন বিচারপতি।
সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশের পরই প্রধান বিচারপতির এজলাসে হাজির হন মামলাকারী। ওই নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে মামলা হয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। শুক্রবারই হবে শুনানি। তবে, এই মামলায় একেবারেই সন্তুষ্ট নন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আপনারা রেড রোডেই বা করতে চাইছেন কেন?’