
কলকাতা: আরজি কর আন্দোলনে প্রথম সারিতে থাকা তিন জুনিয়র ডাক্তারের পোস্টিং মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। তিন জুনিয়র ডাক্তারের পোস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত বা পদ্ধতির ন্যায্যতা কীভাবে প্রমাণ করবেন? সোমবার রাজ্যকে এই প্রশ্ন করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। একইসঙ্গে রাজ্যের কাছে বিচারপতি জানতে চান, পোস্টিং কি মেধাভিত্তিক হয়? নাকি যাঁকে যেখানে পছন্দ, তাঁকে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়? জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর মামলায় রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। অনিকেতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে হলফনামা আকারে রিপোর্ট দেবে রাজ্য।
বাকি দুই জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিস হালদার এবং আশফাকুল্লা নাইয়ারের মামলাতেও আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এদিন বিচারপতি মৌখিক পর্যবেক্ষণে বলেন, আদালত আশা করে আগামী সোমবার পর্যন্ত অনিকেত মাহাতোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করবে না রাজ্য।
অনিকেত মাহাতো দাবি করেছেন, তাঁর র্যাঙ্ক ২৪। আরজি কর হাসপাতালে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে ৪টি শূন্যপদ আছে। তার মধ্যে ২টি শূন্যপদে ২৬ এবং ৩৪ র্যাঙ্ক করা দুই চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। অথচ অনিকেত নিয়োগ পাননি। এই নিয়ে বিচারপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে প্রশ্ন করেন, এই পদক্ষেপের ন্যায্যতা কীভাবে প্রমাণ করবেন? তারপরই মৌখিক পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বলেন, আরজি করের অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের বাকি একটি শূন্যপদে আগামী সোমবার পর্যন্ত নিয়োগ করবে না রাজ্য। রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেলও এই নিয়ে মৌখিক আশ্বাস দেন।
স্বাস্থ্য দফতরের বদলির নির্দেশ না মানা নিয়ে এদিন অনিকেতের আইনজীবী সওয়াল করেন, “আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যেন কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ না করা হয়। আর মামলা চলাকালীন যেন আরজি কর হাসপাতালেই কাজ করতে দেওয়া হয়।” তারপরই বিচারপতি মৌখিক নির্দেশ দেন, অনিকেতের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা যাবে না। আগামী মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
এদিন হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে অনিকেত মাহাতো বলেন, “কেন আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি, আগের শুনানিতে তা তুলে ধরেছিলেন আমাদের আইনজীবী। আজ অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছ থেকে বিচারপতি জানতে চান, অনিকেতদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের কী বক্তব্য? তখন অ্যাডভোকেট জেনারেল সময় চান। তিনি রিপোর্ট আকারে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন। আগামী মঙ্গলবার পরবর্তী শুনানি। আমি যেহেতু জয়েন করিনি, এই শুনানির মাঝখানে যাতে আমার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করা হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এর পাশাপাশি আরজি কর কলেজে যে আসন শূন্য রয়েছে, তা যাতে শূন্য রাখা হয়, তা নিয়ে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। অ্যাডভোকেট জেনারেল তাতে মৌখিকভাবে সম্মতি জানিয়েছেন।”